আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): কাতারের আয়োজনে সোমবার অনুষ্ঠিত জরুরি আরব-ইসলামিক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসরাইলের কাতারে চালানো ‘বেপরোয়া ও উসকানিমূলক’ হামলাকে কঠোরভাবে নিন্দা জানান।
তিনি এটিকে কাতারের সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করে ইসরাইলকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী হামলাকে ‘ভ্রাতৃপ্রতিম ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং গাজায় তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানান। তিনি ইসরাইলের সম্প্রসারণবাদী আগ্রাসন মোকাবিলায় আরব-ইসলামিক একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেন।
শাহবাজ শরিফ বলেন, ইসরাইলের গণহত্যামূলক অভিযান গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং মানবতার ওপর অমোচনীয় ক্ষত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনের শিশুদের ওপর হামলার কথাও তুলে ধরেন, বিশেষ করে ১০ বছর বয়সি আমীরের উল্লেখ করেন, যাকে খাবারের সন্ধানে বের হওয়ার সময় ইসরাইলি সেনারা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, একই সঙ্গে ৬৪,০০০ ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার পাশাপাশি বন্দিদের মুক্তি, মানবিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ এবং সাংবাদিক ও ইউএন কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, পূর্ব-১৯৬৭ সীমানা অনুযায়ী আল কুদস আল শরিফকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ছাড়া স্থায়ী শান্তি অর্জন সম্ভব নয়।
সম্মেলনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সৌদি আরব, মিশর ও জর্ডানের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ইসরাইলের হামলাকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করার উদ্দেশ্যপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
মিশরের রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসির সঙ্গে বৈঠকে কাতারের প্রতি সমর্থন ও ইসরাইলের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার গুরুত্ব আলোচনা করা হয়।
জর্ডানের (দ্বিতীয়) কিং আবদুল্লাহ -এর সঙ্গে বৈঠকে শাহবাজ শরিফ বলেন, ইসরাইলের হামলা গুরুতর আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করার প্রচেষ্টা।
শাহবাজ শরিফ বলেন, দোহা সম্মেলন মুসলিম বিশ্বের ঐক্য এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। মুসলিম দেশগুলো ইসরাইলের ‘অবৈধ ও বেপরোয়া আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে একত্রিত এবং ফিলিস্তিনের জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় অবস্থান অব্যাহত রাখবে।
Your Comment