আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কায়া ক্যালাসও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দুই পক্ষ সাম্প্রতিক মাসের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করেন, যা ইরানের পারমাণবিক ইস্যুর সমাধান এবং উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছিল।
আরাকচি ইরানের নীতিগত অবস্থান ও বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ তুলে ধরেন এবং পারমাণবিক প্রোগ্রামের বিষয়ে যে কোনো সন্দেহ বা অজুহাত দূর করার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
তিনি ইরান ও তার পারমাণবিক স্থাপনায় করা আইনবিরোধী ও অপরাধমূলক হামলাকে অ-প্রসারক ব্যবস্থার ইতিহাসের একটি “অন্ধকার ও বিপজ্জনক অধ্যায়” হিসেবে বর্ণনা করেন।
গত জুন ১৩ ইসরায়েল ইরানের ওপর উগ্র ও অপ্ররোচিত হামলা চালায়, যা ১২ দিনের যুদ্ধে রূপ নেয় এবং অন্তত ১ হাজার ৬৪ জন নিহত হন, যার মধ্যে সেনা কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রও তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে।
প্রতিক্রিয়ায় ইরানি সশস্ত্র বাহিনী কৌশলগত লক্ষ্যস্থল ও কাতারের আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালায়। জুনে ইরান এই সফল প্রতিশোধী অপারেশনের মাধ্যমে হামলা বন্ধ করতে সক্ষম হয়।
আরাঘচি বলেন, “ইরানি জনগণ আশা করেছিল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু তারা শুধু নীরবতা, অক্রিয়তা ও রাজনৈতিকীকরণের সাক্ষী হয়েছে।”
আরাঘচি বৈঠকে ইরানের সর্বশেষ দায়িত্বশীল পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন। সেটা হলো আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে তার সুরক্ষা বাধ্যবাধকতা পূরণ করা। তিনি ইউরোপীয় পক্ষের পক্ষান্তর ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন।
এ বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ইরান ও আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির মধ্যে কায়রোতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা নতুন কাঠামোয় পারমাণবিক সহযোগিতা পুনঃসূচনা করবে। এই চুক্তি পারমাণবিক খাতে বিশ্বাস পুনঃস্থাপন ও সহযোগিতা পুনরায় শুরু করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
চুক্তিটি আরাঘচি ও গ্রোসির মধ্যে তিন ঘণ্টার বৈঠকে স্বাক্ষরিত হয়। এর আগে ভিয়েনা ও তেহরানে তিনটি রাউন্ড আলোচনার মাধ্যমে কার্যকর সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল।
আইএইএ প্রধান নতুন চুক্তিকে “সঠিক পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে বর্ণনা করেন, তবে চুক্তির পূর্ণ বিবরণ শিগগিরই প্রকাশ করা হবে না।
নতুন চুক্তির মাধ্যমে আইএইএর নিরীক্ষকরা ইরানের সমস্ত পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশাধিকার পাবেন, যার মধ্যে জুনের সামরিক হামলায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা ধ্বংস করা স্থাপনাগুলোও রয়েছে।
Your Comment