৫ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০৩:২৫
ইমাম মাহদী (আ.ফা.) এবং হযরত ঈসা (আ.) কি একই সময়ে আবির্ভাব করবেন ?

প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর আবির্ভাব শুধু মুসলমানদের জন্যই নয়—এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য এক মহান ঐশ্বরিক ঘটনা/সেই মহিমান্বিত মুহূর্তে ঈসা (আ.)ও স্বয়ং উপস্থিত থাকবেন, আল্লাহর ইচ্ছায় এই পবিত্র আবির্ভাবের সাক্ষী হয়ে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসলামী বর্ণনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর আবির্ভাবের সময় ঈসা (আ.)-এর অবতরণ এবং ইমাম মাহদীকে অনুসরণ এবং তাঁর সাথে নামাজ আদায় করা।




বরাবরই এ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: ঈসা (আ.)-কে কি ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিল?

পবিত্র কুরআনের সূরা আন-নিসা, আয়াত ১৫৮-এ আল্লাহ স্পষ্টভাবে উত্তরে বলেছেন—

«… وَ ما قَتَلُوهُ وَ ما صَلَبُوهُ وَ لکِنْ شُبِّهَ لَهُمْ … بَلْ رَفَعَهُ اللَّهُ إِلَیْهِ …»

অর্থাৎ: “তারা তাঁকে হত্যা করেনি বা ক্রুশবিদ্ধও করেনি; বরং তাদের কাছে এমন মনে হয়েছিল, প্রকৃত অর্থে আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে তুলে নিয়েছেন।”


সহীহ হাদীসে উল্লেখ আছে যে, ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর আবির্ভাবের পর হযরত ঈসা (আ.) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন এবং ইমাম মাহদীর নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।


রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—

“আমার উম্মতের মধ্যে সর্বদা একটি দল থাকবে যারা সত্যের পথে যুদ্ধ করবে; কিয়ামত পর্যন্ত তারা বিজয়ী থাকবে। এরপর মরিয়মের পুত্র ঈসা (আ.) অবতরণ করবেন। আর তখন তাঁদের নেতা, অর্থাৎ যুগের ইমাম মাহদী (আ.ফা.) ঈসা (আ.)-কে বলবেন: ‘আসুন, আমাদের নামাজের ইমাম হন।’ ঈসা (আ.) তখন উত্তর দেবেন: ‘না, আপনাদের মধ্যেই কেউ নেতা ও অন্যদের উপর কর্তৃত্ব রাখে, কারণ আল্লাহ এই শেষ উম্মতকে সম্মানিত করেছেন।’”


হযরত ঈসা (আ.)-এর স্বর্গারোহণ এবং তাঁর দীর্ঘায়ু জীবন, ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর আবির্ভাবের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে প্রকাশ পাবে ও সেই সময়ে বিশ্বের বহু খ্রিস্টান তাঁর এই অবতরণে বিশ্বাস স্থাপন করবে।

তাই স্বাভাবিকভাবেই, হযরত ঈসা (আ.)-এর এই প্রত্যাবর্তনে বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টান সমাজ গভীর আনন্দ ও তৃপ্তি প্রকাশ করবে এবং মুসলমানদের ন্যায় এই ঘটনাকে একটি ঐশ্বরিক আশীর্বাদ হিসেবে গণ্য করবে।

2038130.jpg

হযরত ঈসা (আ.) বিভিন্ন দেশে সফর করবেন এবং আল্লাহ তাঁর মাধ্যমে নিদর্শন ও অলৌকিকতা প্রকাশ করবেন যাতে মানবজাতি ধীরে ধীরে ইসলামের সত্যের দিকে উন্মুক্ত হয়।


এই মহিমান্বিত উপস্থিতির প্রথম ফলাফল হবে—ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি পশ্চিমা শক্তিগুলির শত্রুতা প্রশমিত হবে। বর্ণনা অনুসারে, ঈসা (আ.)-এর আগমনের পর তাদের এবং ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর মধ্যে শান্তিচুক্তি ও যুদ্ধবিরতি স্থাপিত হবে।


ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-এর বিশ্বব্যাপী ইসলামী হুকুমতে কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্তরা হবেন জাতির প্রবীণ, সৎ ও ধার্মিক ব্যক্তিদের মধ্য থেকে।


17387959-4492-b__793928061.jpg

হাদীসে বর্ণিত আছে যে, এই হুকুমত নবী, তাঁদের উত্তরসূরি এবং আল্লাহভীরু ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হবে।

একটি বর্ণনায় উল্লেখ আছে—হযরত ঈসা (আ.) ইমাম মাহদী (আ.ফা.)-কে বলবেন:

“নিঃসন্দেহে, আমাকে একজন মন্ত্রী হিসেবে পাঠানো হয়েছে—নেতা বা পরিচালক হিসেবে নয়।”

(মুলাহিম ইবনে তাউস, পৃষ্ঠা ৮৩; আল-ফিতান, ইবনে হাম্মাদ, পৃষ্ঠা ১৬০)

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha