আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): হুজ্জাতুল ইসালাম সাইয়্যেদ আলী আব্বাস ওমিদ আযমী: হযরত উম্মুল বানীন (সা.আ.)-এর জীবনী মহান মানবিক শিক্ষায় পরিপূর্ণ একটি গ্রন্থ; এমন একটি গ্রন্থ যার প্রতিটি পৃষ্ঠা আনুগত্য, ত্যাগ, আন্তরিকতা, অধ্যবসায় এবং অন্তর্দৃষ্টির মতো শিরোনামে সজ্জিত।
আমিরুল মুমিনীন ইমাম আলী (আ.)-এর ঘরে প্রবেশের পর, তিনি কেবল একজন স্ত্রী হিসেবেই আবির্ভূত হননি, বরং একজন সচেতন মা, একজন অভিভাবক-মুখী পরামর্শদাতা এবং ইমামতের বংশের একজন প্রকৃত অভিভাবকের ভূমিকাও পালন করেছিলেন।
হযরত উম্মুল বানীন (সা.আ.) ছিলেন এমন একজন মা যিনি তাঁর সন্তানদের লালন-পালনের মূল লক্ষ্য ছিলেন আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহর রবের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য। এই পথে তিনি এত আন্তরিকতা ও ত্যাগের পরিচয় দিয়েছিলেন যে, তিনি তাঁর সন্তানদেরকে বিনা দ্বিধায় আল্লাহর পথে উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন: "এই মহান নারীর গুণাবলী কেবল এই নয় যে তিনি শহীদদের মা ও তিনি দ্বিন রক্ষার্তে চারটি বীর- সাহসী সন্তানকে উপহার দিয়েছিলেন; বরং, তার প্রকৃত মহত্ত্ব নিহিত রয়েছে তার দূরদৃষ্টি এবং একজন অভিভাবক হিসেবে তার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে।"
তিনি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রতি ভালোবাসা এবং আনুগত্যকে সবকিছুর চেয়েও বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন, এমনকি মাতৃত্বের অনুভূতির চেয়েও। মানবতার ইতিহাসে এত জ্ঞান এবং অন্তর্দৃষ্টি খুবই বিরল, এবং এই বৈশিষ্ট্য হযরত উম্মুল বানীন (সা.আ.)-কে বিশ্বের সকল মা ও নারীর জন্য একজন স্থায়ী আদর্শ করে তোলে।
হযরত উম্মুল বানীন (সা.আ.)- এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণী হলো, যদি একজন নারী নিজের মধ্যে আন্তরিকতা, প্রজ্ঞা, ধর্মীয় উৎসাহ এবং শিক্ষাগত সচেতনতা বৃদ্ধি করে, তাহলে সমাজের সংস্কার আপনাআপনিই ঘটবে।
একজন নারী হলেন পরিবারের প্রধান স্তম্ভ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রথম শিক্ষক; তিনি যদি আলো ও জ্ঞানের পথে এগিয়ে যান, তাহলে একটি আলোকিত ও সদাচারী সমাজ গড়ে উঠবে।
হযরত উম্মুল বানীন (সা.আ.) যেমন তাঁর কোলে এমন শিশুদের লালন-পালন করেছিলেন যারা ইতিহাসে আনুগত্য, সাহস এবং বিশ্বাসের অতুলনীয় উদাহরণ হয়ে উঠেছে, তেমনি আজকের নারীরাও তাদের ধর্মীয় ও নারীত্বের মূল্যবোধকে স্বীকৃতি দিয়ে ধার্মিক, বিশ্বস্ত এবং দায়িত্বশীল তরুণদের গড়ে তুলতে পারেন।
এটি বাস্তবায়নের শর্ত হলো, নারীর উচিত ঘরকে নিজের জন্য সীমাবদ্ধতা হিসেবে নয়, বরং মানবিকীকরণ ও আধ্যাত্মিক বিকাশের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা; এবং সম্পূর্ণ বস্তুগত অর্জনের চেয়ে তার সন্তানদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক লালন-পালনকে অগ্রাধিকার দেওয়া। হযরত উম্মুল বানীন (সা.আ.) দেখিয়েছেন যে, সঠিক শিক্ষাগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং দায়িত্বশীল মনোভাব থাকলে একজন নারী তার পরিবার ও সমাজে আলোর উৎস হতে পারে।
Your Comment