‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
মঙ্গলবার

১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

১:৩২:৪৭ PM
1224879

সীমান্ত সমস্যা সমাধানে পাক-আফগান যৌথ কমিটি গঠনের বিষয়ে সমঝোতা

পাকিস্তান সরকার এবং আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য যৌথ কমিটি গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। দু'দেশের ডুরান্ট সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে তালেবান কর্তৃপক্ষ ও পাকিস্তান সরকারের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়ার পর যৌথ কমিটি গঠনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মোঈদ ইউসুফ কাবুল সফরে যাওয়ার পর সীমান্ত সমস্যা নিরসনের বিষয়ে যৌথ কমিটি গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোঈদ ইউসুফ আফগানিস্তানে দুদিনের সফরে গিয়ে তালেবান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম হানাফি এবং তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মোত্তাকির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তাদের সাক্ষাতে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিসহ দেশটির সর্বশেষ সার্বিক অবস্থার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। সীমান্ত বিষয়ক যৌথ কমিটি গঠনের পর দুপক্ষই সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনে চেষ্টা চালাবে।

আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের ডুরান্ট সীমান্ত নিয়ে যে বিতর্ক চলছে তা বর্তমান  তালেবান শাসনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয় নয় বরং পাকিস্তানের কর্মকর্তারা প্রায় ছয় বছর আগে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় বেড়া নির্মাণের জন্য বিশেষ বাজেট বরাদ্দ দেয়ার পর থেকেই ডুরান্ট সীমান্ত নিয়ে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যকার ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বিভক্তকারী রেখাকে বলা হয় ডুরান্ড লাইন। ১৮৯৩ সালে তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আফগানিস্তানের তৎকালীন শাসক আব্দুর রহমান খানের সঙ্গে এক চুক্তি সই করে। ওই চুক্তিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার বর্তমান বিভক্তরেখা নির্ধারণ করা হয় যার নাম হয় ডুরান্ট লাইন। কিন্তু ওই চুক্তির কোনো সময়সীমা ছিল না বলে এই লাইনটি এখন পর্যন্ত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার স্থায়ী সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। পাকিস্তান এটিকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে পরিণত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করলেও আফগানিস্তান এই উদ্যোগ মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং পাকিস্তানের এ উদ্যোগকে তারা বেআইনি বলে মনে করে।

যাইহোক শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কর্তৃপক্ষের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য যৌথ কমিটি গঠনের পদক্ষেপ নেয়া থেকে বোঝা যায় ‌কোনো দেশই এ নিয়ে উত্তেজনা জিইয়ে থাকুক তা তারা চায় না। এ কারণে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কাবুল সফরের মাধ্যমে তালেবানের সাথে সমঝোতা হয়েছে যাতে রাজনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করা যায়। 

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পির মোহাম্মদ মোল্লাযেহি বলেছেন, বিরাজমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান আশা করছে সীমান্ত সমস্যা সমাধানের পর অন্য সব বিষয়ে তালেবানের সঙ্গে একসঙ্গে তারা কাজ করবে। অবশ্য তালেবান কর্তৃপক্ষও পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে যাতে তালেবানের প্রতি পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন ব্যহত না হয়। যেহেতু তালেবান বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের চেষ্টা করছে সে কারণে তারা চাইবে না পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হোক। এ অবস্থায় দুদেশের মধ্যে যৌথ সীমান্ত কমিটি সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে সকলের প্রত্যাশা।# 

342/