‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

৪ জানুয়ারী ২০২৩

৬:৪৪:৪১ PM
1336021

সোলায়মানি হত্যার ৩ বছর: প্রতিরোধ শক্তির দুর্বার অগ্রযাত্রা

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র বিমান বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ বলেছেন: জেনারেল শহীদ সোলেইমানিকে হত্যার ৩ বছর পর প্রতিরোধের শক্তি হাজার গুণ বেড়েছে। গতকাল এক সাক্ষাৎকারে হাজিজাদেহ আরও বলেন: বাতিল নিশ্চিহ্ণ না হওয়া পর্যন্ত এবং এ অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনাদের বিতাড়ন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাসেম সোলায়মানি হত্যার প্রতিশোধের পতাকা উড়তেই থাকবে।

জেনারেল হাজিজাদেহ বলেন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল ভেবেছিল জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা করা হলে এ অঞ্চলে প্রতিরোধ শক্তি নির্মূল হয়ে যাবে। অথচ তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। জেনারেল কাসেম সোলেইমানির শাহাদাতের পর এ অঞ্চলে প্রতিরোধ শক্তি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ভোর রাতের দিকে ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে ইরানি কুদস ব্রিগেডের সাবেক প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং তাঁর সহযোদ্ধা ইরাকের হাশদ্ আশ শাবির কমান্ডার আবু মাহদি মুহানদিসসহ আরও ৮ জনকে সন্ত্রাসী মার্কিন সরকার ও তার সহযোগী চক্রগুলো হত্যা করে। হোয়াইট হাউজ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি নির্দেশে ড্রোনের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালায়। যুদ্ধের ময়দানে তাদেরকে হারাতে ব্যর্থ হয়ে কাপুরুষ শত্রুরা ওই গুপ্ত হত্যার আশ্রয় নেয়। ট্রাম্প এবং তার জাতীয় নিরাপত্তা টিম তেলআবিবের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ট। সে সময় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ছিল বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তারা ভেবেছিলো জেনারেল সোলায়মানিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করতে পারলে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্ষমতা ও মর্যাদা মুখ থুবড়ে পড়বে এবং প্রতিরোধ শক্তি প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে কাসেম সোলায়মানির মতো একজন বীর সেনানির মৃত্যুতে ইরানের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। কিন্তু তাঁর মৃত্যুতে প্রতিরোধ শক্তি দুর্বল হয়ে গেছে-এই চিন্তাটাই চরম ভুল। বরং সোলায়মানির শাহাদাতের পর বিগত ৩ বছরে ইরাকের হাশদ-আশ-শাবি থেকে শুরু করে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ বাহিনী, লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস, জেহাদে ইসলামির মতো প্রতিরোধ সংগঠনগুলো পশ্চিম এশিয়ায় ওয়াশিংটন-তেলআবিবের সকল ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনাগুলো মারাত্মকভাবে পণ্ড করে দিয়েছে। বিশেষ করে ইয়েমেনে পশ্চিমা, আরব ও ইহুদিবাদীদের স্বার্থ প্রতিরোধ শক্তিগুলো ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে। সাইয়্যেদ আবদুল মালেক আল-হুথির নেতৃত্বে আনসারুল্লাহ আন্দোলন এখন ইয়েমেনের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে হাজিজাদেহ বলেন: আনসারুল্লাহ বাহিনী দৃঢ়তার সঙ্গে বৃহৎ শক্তিগুলোর মোকাবেলা করে তাদের ক্ষমতা প্রমাণ করেছে এবং ইয়েমেনে অপ্রতিরোধ্য ও গর্বিত এক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আনসারুল্লাহসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ শক্তিগুলো প্রাণীত হবার নেপথ্যে প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করেছে শহীদ সোলায়মানির দূরদর্শি চিন্তা-চেতনা। সেই প্রতিরোধ শক্তিগুলোর দৃঢ় সংগ্রাম আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর দর্প খর্ব করেছে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয় প্রতিরোধ শক্তিগুলোর অগ্রযাত্রা দুর্বার গতিতে অব্যাহত রয়েছে। তাদের এই অগ্রযাত্রা সমগ্র পশ্চিম এশিয়া থেকে আমেরিকা ও ইসরাইলের বিতাড়ন পর্যন্ত চলবে বলে তারা অঙ্গীকারাবদ্ধ।#

342/