‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
মঙ্গলবার

২৩ এপ্রিল ২০২৪

৫:৪৩:৪৮ PM
1453501

পশ্চিমা হস্তক্ষেপ ছাড়া ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ কেমন হবে?

পার্সটুডে: ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের শাস্তিমূলক হামলার পর সামরিক বিশ্লেষকরা এই যুদ্ধের বিভিন্ন দিক ও ফলাফল বিশ্লেষণ করেছেন।

বেশিরভাগ বিশ্লেষক যে দিকগুলোর ওপর দৃষ্টি দিয়েছেন তার মধ্যে একটি হল ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং শক্তি। ১৩ এপ্রিল ইসরাইলে ইরানের হামলায় আয়রন ডোমের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। অনেক ইরানি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের প্রতিরক্ষা প্রাচীর অতিক্রম করেছে।

সামরিক বিশ্লেষকরা তাই এই দুর্বলতার কারণ এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য কোনো যুদ্ধে ইসরাইল যেসব সমস্যার মুখোমুখি হবে তা নিয়ে অনুসন্ধানী বিশ্লেষণ করেছেন।

ইসরাইলের ওপর ইরানের শাস্তিমূলক হামলা; এমন ক্ষত যা সারবে না

ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এনিয়ে একটি বিবৃতি দেয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন: ইসরাইলি সেনাবাহিনী অন্যান্য মিত্র দেশের সাহায্য ছাড়া ইরানের হামলার ৭৫ শতাংশের বেশি লক্ষ্যবস্তু প্রতিহত করতে সফল হতে পারত না। সামরিক ও কৌশলগত বিষয়ের বিশেষজ্ঞ কর্নেল হাতেম করিম আল ফালাহির মতটিও এর কাছাকাছি। তিনি বলেছেন: ইরানের মোকাবেলায় ইসরাইল একা, তাই ইরানের সঙ্গে বৃহৎ যুদ্ধের শক্তি ও ক্ষমতা তার নেই।

আলজাজিরা টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, ইরান গত শুক্রবার সকালে ইস্ফাহানের আকাশে সংঘটিত বিস্ফোরণ সম্পর্কে বলেছে: সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে নি। দেশের স্পর্শকাতর কোনো স্থাপনাতেও কোনোরকমের ক্ষয়ক্ষতি হয় নি। অথচ আমেরিকার মিডিয়াগুলো সেদেশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে: ইসরাইল ইরানের হামলার জবাবে ইস্ফাহানে হামলা চালিয়েছে।

হাতেম করিম আল ফালাহির বিশ্লেষণ অনুযায়ী ইরানের হামলা ইসরাইলি সেনাদের শক্তি ও সক্ষমতা সম্পর্কে বাস্তব সত্য ফাঁস করে দিয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাও দেখিয়ে দিয়েছে। আয়রন ডোমের অকার্যকরতা আগের তুলনায় অনেক বেশি ফুটিয়ে তুলেছে।

আল-ফালাহি এ সম্পর্কে আরও বলেন:

ইসরাইল তার তিন প্রধান মিত্র শক্তি-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের হস্তক্ষেপ ছাড়া ইসরাইলের দিকে আসা ক্ষেপণাস্ত্রের শতকরা ২৫ ভাগও আটকাতে এবং গুলি করতে পারতো না।

সাম্প্রতিক হামলায় কোন কোন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে?

আল-ফালাহির মতে ইসরাইলের তিনটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে: আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং এবং অ্যারো। এগুলোর বাইরেও ইহুদিবাদী ইসরাইলের কাছে ইন্টারসেপ্টর প্লেন এবং বিভিন্ন রকমের বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র রয়েছে যেগুলো শত্রু বিমানগুলোকে গুলি করতে কার্যকর অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

আল জাজিরার সামরিক ও কৌশলগত এই বিশেষজ্ঞ আরও উল্লেখ করেছেন: ইরান ইসরাইলে হামলার ক্ষেত্রে তাদের উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করে নি। শুধুমাত্র তার পুরোনো অস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং শত্রুদের বিভ্রান্ত করার জন্য তাদের ড্রোনগুলোকে কম গতিতে ইসরাইলি ভূখণ্ডের দিকে পাঠিয়েছে।

লক্ষণীয় বিষয়টি হলো আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স ১৩ এপ্রিলে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনগুলোতে প্রতিহত করতে অংশ নিয়েছিল। তারা তেল আবিবের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করার পাশাপাশি বলেছিল: তারা এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াতে চায় না।

এ বিষয়টির প্রতি আল জাজিরার বিশ্লেষক জোর দিয়ে বলেন: যে যুদ্ধে শুধুমাত্র ইরান এবং ইসরাইল অংশগ্রহণ করবে, সেখানে ইহুদিবাদী ইসরাইল কোন সুবিধা করতে পারবে না।#