‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
রবিবার

১৪ জুলাই ২০২৪

৫:১৯:০৫ AM
1471851

হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযান দীর্ঘস্থায়ী হলে ইসরাইল দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে

যুদ্ধ যত দীর্ঘ স্থায়ী হতে থাকবে ইসরাইল অভ্যন্তরীন ভাবে ততো বেশি ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়বে এবং এই মেকি কৃত্রিম যালেম সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি ততো বেশী বিলুপ্তি ও পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে যেতে থাকবে। তখন আর শেষ রক্ষা হবে না।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): "ইসরাইলী জেনারেলরা যুদ্ধবিরতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে ও পছন্দ করছে। "- এতদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরাইল সরকার (প্রধান মন্ত্রী নেতানিয়াহু.. এবং তার মতো যুদ্ধবাজ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ) জোর তাগিদ দিয়ে বলছে যে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযান দীর্ঘস্থায়ী হবে  ।  - ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা ৩ জুলাই , ২০২৪

বিশ্লেষণ :

ব্রিটিশ গার্ডিয়ান পত্রিকার এ প্রতিবেদন থেকে প্রতীয়মান হয় যে গাযায় আগ্রাসন ও যুদ্ধে ইসরাইলী সেনাবাহিনী সুবিধা জনক অবস্থায় নেই । তাদের কোন বিজয় নেই , সাফল্য ও অর্জন নেই  কেবল ৪০,০০০ গাজাবাসীকে গণহত্যা যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু , ৮০০০০ এর অধিককে আহত এবং গাযায় ব্যাপক ধ্বংস সাধন করা ছাড়া ইসরাইলী সেনাবাহিনীর আর কোনো গৌরবোজ্জল অর্জন নেই । দীর্ঘ যুদ্ধে অনভ্যস্ত ইসরাইলী সেনাবাহিনী এই প্রথম বারের মতো বিজয় ও সাফল্য ছাড়াই নয় মাসের দীর্ঘ যুদ্ধে জড়িয়ে এখন প্রচণ্ড শ্রান্ত , ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত । এই দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করেও যুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্য সমূহের কোনো একটিও অর্জন করতে পারে নি তারা। হামাসকে নির্মূল করতে পারে নি ইসরাইলী সেনাবাহিনী বরং উল্টো হামাস আরো শক্তিশালী হয়েছে এবং হামাসের প্রতি গাযাবাসীদের সমর্থন যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিক তেমনি আপামর ফিলিস্তিনী জনতার মাঝেও হামাসের সমর্থন ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এমনকি জর্দান নদীর পশ্চিম তীরেও । এদিকে গাযায় যুদ্ধ চলতে থাকলে উত্তর ইসরাইলে শক্তিশালী হিযবুল্লাহর সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। তখন দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ করা ক্লান্ত শ্রান্ত ইসরাইলী সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত মুশকিল ও কঠিন হয়ে যাবে এমনকি ইসরাইলী সেনাবাহিনীর পক্ষে ঐ যুদ্ধের ধকল সহ্য করা সম্ভব হবে না । এসব দিক ইসরাইলী সেনাবাহিনী উপলব্ধি করতে পারছে কারণ তারা রণাঙ্গনে রয়েছে এবং ভুক্তভোগী। আর নেতানিয়াহু ও তার মতো রাজনৈতিক নেতারা তো যুদ্ধ করছে না। যুদ্ধের কোন ধকলও তাদের পোহাতে হচ্ছে না। তাই তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। এভাবে দীর্ঘ স্থায়ী যুদ্ধে অবশেষে ইসরাইলী সেনাবাহিনী ভেতর থেকে ভেঙ্গে পড়তে পারে এবং তখন আর শেষ রক্ষা হবে না। যুদ্ধ যত দীর্ঘ স্থায়ী হতে থাকবে ইসরাইল অভ্যন্তরীন ভাবে ততো বেশি ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়বে এবং এই মেকি কৃত্রিম যালেম সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি ততো বেশী বিলুপ্তি ও পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে যেতে থাকবে। তখন আর শেষ রক্ষা হবে না। নেতানিয়াহু ও ওর মতো দুর্নীতি বাজ নেতারা নিজেদের স্বার্থে এ যুদ্ধ জিইয়ে রাখছে । কারণ যুদ্ধ বন্ধ হয়ে গেলে তাদের গদিও তখন হারাতে হবে এবং জেলে যেতে হবে ও তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি যুদ্ধে কিছু সফলতা দেখিয়ে জেল খাটা ও ক্যারিয়ার ধ্বংস হওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায় তাহলে তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতেই হবে । কিন্তু সেনাবাহিনীর অবস্থা দিনের পর দিন করুণ ও সঙ্গীন হয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত সৈন্য মারা যাচ্ছে , জ়খ়মী হচ্ছে এবং অস্ত্র শস্ত্রও ব্যাপক ধ্বংস হচ্ছে। এতে ইসরাইলী সেনাবাহিনী মনোবল হারাচ্ছে ও তাদের যুদ্ধ করার সামর্থ্য কমে যাচ্ছে । এ অবস্থা চলতে থাকলে কী হবে ?!!! এ সব কিছু ভাবছে ইসরাইলের ক্লান্ত-শ্রান্ত ও পর্যদুস্ত সেনাবাহিনী। হ্যাঁ , ইসরাইলী সেনাবাহিনী আসলেই ব্যর্থ ও পর্যদুস্ত হয়েছে । আর তা ইসরাইলী সেনা কর্মকর্তারা যেমন কিছু দিন আগে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল দানিয়েল হাজারী (হাগারী) পর্যন্ত মুখে বলেছে।

আসলে ফিলিস্তিনীদের বিজয়ের সুপ্রভাত নিকটেই ।

ইন্না হুম ইয়ারাওনাহূ বাঈদাঁ ওয়া নারাহু ক্বরীবা ( তারা -অবিশ্বাসীরা - এটাকে দূরবর্তী দেখে ও মনে করে । কিন্তু আমরা এটাকে নিকটবর্তী দেখছি ) ।

 

বিশ্লেষক, মুহাম্মাদ মুনীর হোসাইন খান

আল-মুস্তাফা, আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান