‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

২ ডিসেম্বর ২০২৪

৬:৪৮:৩২ PM
1510440

ইরানে কয়েক হাজার কারাবন্দির মুক্তি এবং ৩ সন্ত্রাসীর মৃত্যুদণ্ড

পার্সটুডে- ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান ও বিচার বিভাগীয় উচ্চ পরিষদের সদস্যদের তেহরান প্রদেশ সফরের একই সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত এক হাজারের বেশি কারাবন্দির মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান গোলামহোসেইন মোহসেনি এজেয়ি কারাবন্দিদের সমস্যা সমাধানের যে নির্দেশ দিয়েছেন তা পালন করে এসব বন্দির মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বন্দিদের মুক্তি দিতে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে।

ইরানে সড়ক দুর্ঘটনায় গাড়িচাপা পড়ে নিহত হওয়ার মতো অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে ঘাতককে নিহতের পরিবারকে রক্তমূল্য পরিশোধ করতে হয়। ঘাতক যতদিন রক্তমূল্য পরিশোধ করতে না পারেন ততদিন তাকে কারাগারে থাকতে হয়। এছাড়া, অনেককে ব্যক্তিগত পর্যায়ের বা ব্যাংক থেকে নেয়া বড় অঙ্কের ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে কারাভোগ করতে হয়। এ ধরনের ব্যক্তিদের মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কারাগারে সদাচারণ করাসহ নানা কারণে বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে এসব প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত মুক্তিপণ পরিশোধ করে মুক্ত করে থাকে। এছাড়া, ইরানে কারাবন্দিরা বিভিন্ন মেয়াদে ছুটি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারে। বিচার বিভাগের প্রধানের তেহরান প্রদেশের বিভিন্ন কারাগার পরিদর্শনের সময় এ ধরনের প্রায় সাত হাজার কারাবন্দিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

পার্সটুডে এ সম্পর্কে জানাচ্ছে, ইরানের খোরাসানে রাজাভি প্রদেশের অনিচ্ছাকৃত অপরাধে দায়ী ব্যক্তিদের মুক্তিদান বিষয়ক সদরদপ্তরের সচিব জাওয়াদ ইউসুফ আলীজাদে বলেছেন: বাসিজ বা স্বেচ্ছাসেবী সপ্তাহ উপলক্ষে গত সপ্তাহে এই প্রদেশের ৪২ কারাবন্দি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় মুক্তি পেয়েছেন। তারা সবাই অনিচ্ছাকৃত অপরাধের দায়ে কারাভোগ করছিলেন।

ইরানের কোম প্রদেশের এটর্নি জেনারেল হুজ্জাতুল ইসলাম গরিব জানিয়েছেন, কারাবন্দিদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের পর ৬০ কারাবন্দিকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উল্লেখ করা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লাম ও হযরত ইমাম জাফর সাদেক (আ.) এর পবিত্র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ইরানের বিভিন্ন কারাগার থেকে প্রায় তিন হাজার কারাবন্দিকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিচার বিভাগের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম গোলামহোসেইন মোহসেনি এজেয়ির সুপারিশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এসব বন্দির মুক্তির বিষয়টি অনুমোদন করেন।

ইরানে অপরাধীদের ইসলামি আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হয়

একথা মনে রাখতে হবে যে, ইরানের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং এই বিভাগ ইসলামি আইন অনুযায়ী, অপরাধীদের শাস্তি প্রদান করে। কাজেই সকল অপরাধে দণ্ডিত সকল অপরাধীকে ক্ষমা করে দেয়ার সুযোগ এখানে নেই।

কিছুদিন আগে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হামেদান শহরে প্রকাশ্য জনসম্মুখে এক ভয়ঙ্কর আসামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ওই ব্যক্তি বিগত ২০ বছরে অন্তত ২০০ নারী ও মেয়ে শিশুকে ধর্ষণ করেছে।

ওই নরপশু বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলে কিংবা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নারীদেরকে বিপথগামী করত। এছাড়া, বহু নারী ও শিশুকে সে বলপূর্বক ধর্ষণ করেছে। তার বিরুদ্ধ অসংখ্য ভুক্তভোগী থানায় ও আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

এছাড়া, ইরানে আরো যেসব আসামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে পরমাণু বিজ্ঞানীদের ঘাতকেরা। ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগার জাহাঙ্গিরি বলেছেন, ইরানের সাবেক শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী শহীদ ফাখরিজাদেকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তাদেরকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে।#

342/