‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

২ ডিসেম্বর ২০২৪

৬:৪৯:৫১ PM
1510443

সিরিয়ায় সন্ত্রাসী পাঠিয়ে প্রতিরোধ শক্তির মোকাবেলায় শত্রুরা কি পারবে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে?

পার্সটুডে- একজন বিশ্লেষকের মতে, সিরিয়া এবং ইরাকের যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়া সন্ত্রাসীরা উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস-এর চেয়ে শক্তিশালী নয় এবং এদেরকে উৎখাত করা প্রতিরোধ বাহিনীর জন্য কঠিন কোনো কাজ নয়।

দ্রষ্টব্য- লেবানন এবং ইসরাইলি সরকারের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার সাথে সাথে, ইসরাইল এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের সাথে যুক্ত অনেক মিডিয়া তেল আবিবকে বিজয়ী হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন সিরিয়ায় যা ঘটছে তার জন্য সমালোচনাও কম হচ্ছে না। পার্সটুডে-র প্রতিবেদন অনুসারে, "মোহাম্মদ কাজেম আনবারলুই" রেসালাত পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে লিখেছেন:

১- রক্তক্ষয়ী ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন: "গেরিলা গোষ্ঠী বিজয়ী হয় যদি এটি ব্যর্থ না হয়, তবে সরকারী সেনাবাহিনী যদি জয়ী না হয় তবে পরাজিত হয়। "

এই নিয়মের উপর ভিত্তি করে, মার্কিন সরকার প্রথমে যুদ্ধবিরতি এবং পরে ভিয়েতনাম যুদ্ধে শান্তি প্রস্তাব মেনে নেয় এবং ভিয়েতনামে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, গণহত্যা, শিশু ও মহিলাদের গণহত্যার অবসান ঘটায়।

ঠিক এই নীতির ভিত্তিতে নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। এই নিয়ম অনুসারে, হিজবুল্লাহ জয়ী হয়েছে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল তিক্ত পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে। গাজার ব্যাপারেও ইসরাইলের একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।

হাইফা, তেল আবিবসহ ইসরাইলের অন্যান্য অঞ্চলে হিজবুল্লাহ প্রতিদিন ২০০ টিরও বেশি রকেট এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে হিজবুল্লাহ জীবিত আছে এবং চাইলে তারা মাসের পর মাস ধরে ইসরাইলকে ব্যতিব্যস্ত রাখতে পারে।

লিবারম্যান, লাপিদ এবং গ্যান্তজ এর মতো ইসরাইলি কর্মকর্তারা লেবাননের সাথে যুদ্ধবিরতির প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তারা ইসরাইলের পরাজয়ের কথা স্বীকার করেছেন। সরকারি পত্রিকাগুলোও পরাজয়ের কথা স্বীকার করেছে।

২- সাতটি সুস্পষ্ট কারণে নেতানিয়াহু পরাজয় স্বীকার করেছে:

ক. দক্ষিণ লেবানন থেকে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্রের বৃষ্টি এবং ড্রোন হামলা এক মুহূর্তের জন্যও থামেনি।

খ. লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের ইহুদি বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে ফিরে যায়নি।

গ- আলোচনার টেবিলে ইসরাইল ১৭০১ চুক্তিতে ইচ্ছেমতো পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি।

ঘ- দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর স্থল হামলায় ইসরাইলি সেনাদের ব্যাপক হতাহতের ঘটনা।

ঞ-নেতানিয়াহু সরকার বিরোধীদের তীব্র চাপের মধ্যে ছিলেন।

চ- পেজার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কমান্ডার হত্যার মাধ্যমে ইসরাইলের ভুল হিসাব নিকাশ।

ছ- নেতানিয়াহু ঘোষিত কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।

৩- যুদ্ধবিরতির দেড় ঘণ্টা পর উত্তর সিরিয়ার আলেপ্পোতে আশ্চর্যজনকভাবে যুদ্ধ শুরু হয়। এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা ছিল। দেখা গেছে যে আমেরিকা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল ইতিমধ্যে লেবাননে ব্যর্থতার জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থার কথা আগেই ভেবে রেখেছিল। তুর্কি ও ইসরাইল এবং কিছু আরব দেশ সমর্থিত তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পেছন থেকে ছুরি নিয়ে হাজির। ইহুদিবাদী ইসরাইলের নতুন করে শ্বাস নেওয়ার জন্যই এই আয়োজন। একইসাথে হিজবুল্লাহও যাতে শ্বাস নেয়ার সুযোগ না পায় সেটাও তাদের উদ্দেশ্য। তবে সিরিয়া ও ইরাকের যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়া এসব সন্ত্রাসী দায়েশ বা আইএসএর চেয়েও শক্তিশালী নয়।

৪- সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতির খবর এবং একইসাথে সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট। সিআইএ, মোসাদ এবং পেন্টাগন একজোট হয়ে নতুন করে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। #