আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযান দ্রুত বন্ধের দাবিতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং ইউরোপের বিস্তৃত অংশীদারদের নেতৃত্বে মোট ২৫ দেশের কঠোর যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজার বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ নতুন গভীরতায়” নেমে গেছে; ইসরায়েলের বর্তমান সহায়তা বিতরণ পদ্ধতি বিপজ্জনক”, অস্থিতিশীলতা বাড়ায়” এবং গাজাবাসীর æমানব মর্যাদা কেড়ে নিচ্ছে”। দেশগুলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, বাধাহীন মানবিক সহায়তা প্রবাহ এবং বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সোমবার দেওয়া ওই বিবৃতিটি মূলত এমন এক সময়ে দেওয়া হলো যখন গাজায় যুদ্ধ চলছে প্রায় ২১ মাস ধরে এবং যখন খাদ্য, পানি, ওষুধের তীব্র সংকট, সহায়তার লাইনে হত্যাকাণ্ড, এবং শিশু-নারীর ব্যাপক প্রাণহানি বিশ্বজনমতকে নাড়া দিচ্ছে। বিবৃতিতে সতর্ক করা হয় যে বর্তমান পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য; যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হবে। লন্ডনে পার্লামেন্টে বক্তব্য দিতে গিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, æএই যুদ্ধের কোনো সামরিক সমাধান নেই। পরবর্তী যুদ্ধবিরতিই হতে হবে শেষ যুদ্ধবিরতি,” এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরকে মধ্যস্থতামূলক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।
স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে—অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, জাপান, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য; পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধির সমর্থনও রয়েছে।
যৌথ বার্তায় দেশগুলো স্পষ্ট জানিয়েছে: গাজার বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ নতুন গভীরতায় পৌঁছেছে... ইসরায়েলি সরকারের সহায়তা বিতরণ মডেল বিপজ্জনক, অস্থিতিশীলতা উসকে দেয় এবং গাজাবাসীর মানব মর্যাদা কেড়ে নিচ্ছে... প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা অস্বীকার করা অগ্রহণযোগ্য; আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে হবে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সহায়তার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শত শত (৮০০-রও বেশি বলে বিভিন্ন হিসেবে) ফিলিস্তিনির মৃত্যু ভয়াবহ ও অমানবিক চিত্র তুলে ধরছে; গাজার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ দ্রুত শিথিল না হলে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে।
আল জাজিরার লন্ডন প্রতিনিধি সোনিয়া গালেগো বলেন, এটি ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক সংকেত—ইউরোপ পেরিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, জাপানের মতো দেশও সই করেছে, যা বিস্তৃত আন্তর্জাতিক ঐক্য দেখায়। একই সময়ে, ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় যৌথ বিবৃতিকে বাস্তবতা-বিচ্ছিন্ন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং চাপটি হামাসের ওপর কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত বলে দাবি করেছে। ইসরায়েল বলছে, সামরিক চাপ বজায় রাখলে তবেই আলোচনায় হামাসকে নতি স্বীকার করানো যাবে; অন্যদিকে সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, মাঠপর্যায়ের ‘ড্রিপ-ফিড’ সহায়তা মৃত্যু-ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
Your Comment