২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০২:২৫
কিছু দেশের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ফিলিস্তিনের কী লাভ হচ্ছে?

ব্রিটেন, পর্তুগাল, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাসহ মোট ১৫০টি দেশ সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটাকে ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচারের পথে একটি পদক্ষেপ হিসেবে মনে হলেও, এটা কেবলি প্রতীকী উদ্যোগ, ফিলিস্তিনিদের জন্য এটুকু যথেষ্ট নয়।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ফিলিস্তিনি ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের মহাসচিব মুস্তাফা আল-বারগুতি চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেছেন, বিশ্ব ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে যত বেশি স্বীকৃতি দিয়ে চলেছে, ইসরায়েল ততটাই নির্মমভাবে গাজা ও পশ্চিম তীরে তার আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের তদন্ত কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই কর্মকাণ্ডকে “গণহত্যা” ও “জাতিগত নির্মূল” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।



২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিক শহীদ হয়েছেন এবং পুরো অঞ্চলের অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

পশ্চিম তীরে ২০২৫ সালে ২০ হাজারেরও বেশি দখলদার বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা এবং বসতিস্থাপনকারীদের ক্রমবর্ধমান সহিংসতা কার্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সব সম্ভাবনাই ধ্বংস করে দিয়েছে। এসব পদক্ষেপ শুধু আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে না, বরং ফিলিস্তিনিদের পরিচয় ও অধিকার নিশ্চিহ্ন করার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে মুখে বন্ধ করে বসে বসে কেবল অপরাধ অবলোকন করলে আসলে তা কেবল রাজনৈতিক ভনিতা হিসেবেই গণ্য হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শুধু বিবৃতি দেওয়ার বাইরে গিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে—সেই সঙ্গে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে, দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি থামাতে হবে এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

ফিলিস্তিনিদের কথার ফুলঝুরির প্রয়োজন নেই, তাদের প্রয়োজন ন্যায়বিচার, সুরক্ষা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার।

যদি আন্তর্জাতিক মহল গুরুতর হস্তক্ষেপ না করে, তবে এসব স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের কাছে কেবল মরীচিকার মতো এক মিথ্যা আশা হয়ে থাকবে, যখন বাস্তবতা হিসেবে রয়ে যাবে মৃত্যু ও অন্যায়ের দুঃসহ চিত্র।

এখন বিশ্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—তারা কি এই বিপর্যয়ের স্থায়ী সাক্ষী হবে, নাকি এর অবসান ঘটাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে?

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha