‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : parstoday
শনিবার

১১ ডিসেম্বর ২০২১

২:১২:৩৬ PM
1207464

র‍্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা: বিভিন্ন মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)'র সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারকে ডেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ  কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মোমেন বলেন, র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৬ জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধজ্ঞা দুঃখজনক। ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি নিজেও অবাক হয়েছেন ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে (শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। এতে বলা হয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের যুদ্ধে অংশ নিয়ে র‌্যাব আইনের শাসন ও মানবাধিকার খর্ব করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ এতে হুমকির মুখে পড়েছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আওতায় আনা কর্মকর্তারা হলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ (র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক), র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তাফা সারওয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খান। এ সমস্ত ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য হবেন বলে ওই বিবৃতিতে জানান হয়েছে। 

উল্লেখ্য,  ২০০৪ সালে বেগম খালেদা জিয়ার সরকার পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং সীমান্তরক্ষীদের সমন্বয়ে একটি এলিট ফোর্স হিসেবে  র‌্যাব গঠন করে। বিচারবহির্ভুত হত্যাকান্ডের  জন্য শুরু থেকেই  র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচান আসতে থাকে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে যে, ২০০৯ সাল থেকে কমপক্ষে ৬০০ গুমের জন্য দায়ী র‌্যাব এবং বাংলাদেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারীরা। ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ৬০০ মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে; নির্যাতন করা হয়েছে। কোনো কোনো রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসব ঘটনায় টার্গেট করা হয়েছে বিরোধী দলীয় সদস্য সহ বিরোধী মতামতের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার:

এদিকে আজ শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ ইচ্ছে করে ক্রসফায়ার কিংবা গুলি করতে পারে না। সন্ত্রাসীরা যখন আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে, তখন আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা জীবন রক্ষার্থে গুলি করে থাকে। তখন সেটা তার জন্য বৈধ হয় ।

ইতোপুর্বে স্বরাষ্টমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, বাংলাদেশে কোনও বিচার বহির্ভুত হত্যকান্ড ঘটে  নাই। এগুলো এনজিওদের প্রচারনা। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বলেছেন, আমাদের দেশে বন্দুকযুদ্ধের যতগুলো ঘটনা ঘটেছে সব ঘটনারই একটি জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি হয়। যে ঘটনা ঘটলো তার পেছনে যথাযথ কারণ ছিল কিনা। না গাফিলতি ছিল। কোথাও গাফিলতি পেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এর  আগে গতকাল এক ভিডিও বার্তায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে  র‍্যাবের  সাত  কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বস্তুনিষ্ঠভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তারা অতিরঞ্জিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ আমাদের পুলিশ কখনো কাউকে ক্রস ফায়ার বা বিচার বহির্ভূত হত্যা করে না। কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যার উদাহরণ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এদেশে অপরাধীদের মৃত্যুর বড় একটা কারণ,যখন সন্ত্রাসীদের ধরতে যাওয়া হয় তখন তারা সারেন্ডার করে না। তখন আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর গুলি ছুঁড়তেই হয়। তারপরও পুলিশ গুলি ছুড়লে সেটার তদন্তভার একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দেয়া হয়। তদন্তে কোনো গাফিলতি ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।#

342/