‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
রবিবার

১২ মার্চ ২০২৩

৮:০৯:৪৭ PM
1351855

ইরান-সৌদি সম্পর্ক স্থাপনে চীনের ভূমিকায় হতাশ পাশ্চাত্য ও ইসরাইল

চীনের মধ্যস্থতায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে গত শুক্রবার রাজধানী বেইজিংয়ে যে চুক্তি হয়েছে। এ ব্যাপারে চীনের ভূমিকা থেকে বোঝা যায় আঞ্চলিক নানা সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা বেইজিংএর রয়েছে। এমনকি দেশটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে পারে।

এশিয়ায় নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করার এবং অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হওয়ার জন্য চীন গত বেশ ক'বছর ধরে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে চীন আঞ্চলিক নানা সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যাকে আন্তর্জাতিক সমাজ স্বাগত জানিয়েছে। চীনা রাজনৈতিক বিশ্লেষক লি কন এ ব্যাপারে বলেছেন, আমেরিকাকে টেক্কা দেয়ার জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখার সক্ষমতা চীনের রয়েছে এবং দেশটি আমেরিকার চাপ ও ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে'।

সম্প্রতি মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, চীন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আঞ্চলিক সংকট নিরসনে চীনের সহযোগিতা থেকে এ অঞ্চলের দেশগুলোতে বেইজিংএর প্রভাবের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং জাতিসংঘ  নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী  সদস্য  হিসেবে এটা চীনের গঠনমূলক পদক্ষেপ।  চীনের এ অবস্থানকে কয়েকটি দিক থেকে মূল্যায়ন করা যায়। প্রথমত, এটা আমেরিকার হস্তক্ষেপমূলক ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মোকাবেলায় চীনের শক্তিমত্ত্বা ও গঠনমূলক আচরণের পরিচায়ক এবং এতে করে এশিয়ার দেশগুলো জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবে।

দ্বিতীয়ত, পাশ্চাত্যের বিভিন্ন মহল এ কথা স্বীকার করছে যে, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে চীন অনেক বড় সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে এবং এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে আমেরিকা কেবল আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করছে যাতে নিজের অবৈধ স্বার্থ হাসিল করা যায়। আমেরিকার এ আচরণের বিষয়টি এখন আর কারো কাছেই অজানা নয়। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক বাহরাম জাহেদ এ ব্যাপারে বলেছেন, 'আঞ্চলিক ঘটনাবলীতে প্রাচ্যের দেশগুলোর ইতিবাচক ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। এ দেশগুলো নিজেদের মধ্যকার আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব অঙ্গনেও শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বিরাট অবদান রাখতে পারে। অর্থাৎ পাশ্চাত্যের হস্তক্ষেপ ছাড়াই এ অঞ্চলের দেশগুলো নিজেদের বেশিরভাগ সমস্যা সমাধান করতে পারে'।  

যাইহোক, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন পাশ্চাত্য বিশেষ করে আমেরিকার জন্য অনেক বড় চপেটাঘাত যারা কিনা মনে করতো তেহরান-রিয়াদ উত্তেজনা জিইয়ে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারবে। ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় ইসরাইলও চরম হতাশ ও নাখোশ হয়েছে। মোটকথা চীনের ভূমিকায় এ অঞ্চলে আমেরিকা কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।#