‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শনিবার

৪ নভেম্বর ২০২৩

১২:২১:৩৯ AM
1408130

ইসরাইল হল আমেরিকার হাতিয়ার/ ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চেয়ে পবিত্র যুদ্ধ আর নেই : হাসান নাসরুল্লাহ

আজ ৩ নভেম্বর শুক্রবার লেবাননের হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, গাজার নিপীড়িত জনগণের প্রতিরক্ষা ও কুদসের জন্য শহীদদের শ্রদ্ধায় আয়োজিত “কুদসের পথে” শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): আজ শুক্রবার (নভেম্বর) লেবাননের হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ, গাজা ও নিপীড়িত ফিলিস্তিন জাতির প্রতিরক্ষায় শহীদগণের শ্রদ্ধায় আয়োজিত “কুদসের পথে” শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।

 বক্তব্যটি এ কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, প্রতিরোধের এই নেতা তুফানুল আকসা যুদ্ধের সূচনা এবং গাজার নিপীড়িত জনগণের উপর ইহুদিবাদী সরকারের অপরাধ যজ্ঞ শুরু হবার পর থেকে কোন বক্তব্য রাখেননি এবং অনেক পর্যবেক্ষক, বিশ্লেষক ও বিশ্বের মানুষ সৈয়দ হাসান নাসরুল্লাহ’র এই ভাষণের অপেক্ষায় ছিলেন।

হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব তার বক্তৃতার শুরুতে প্রতিরোধ ফ্রন্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে, আল-আকসা ব্রিগেড, ইসলামি প্রতিরোধ, কুদস ব্রিগেড এবং লেবাননের বেসামরিক শহীদদের স্মৃতিচারণ করেন এবং শ্রদ্ধা জানান।

বর্তমান বিশ্বে চলমান যুদ্ধগুলির মধ্যে, ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধের মত কোন বৈধ, নৈতিক ও ধর্মীয় যুদ্ধ আর না থাকার কথা উল্লেখ করে নাসরুল্লাহ বলেন,  তুফানুল আকসা যুদ্ধ একাধিক ফ্রন্ট এবং ময়দানে প্রসারিত হয়েছে।

তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ইমানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, অস্ত্রের আগে আমাদের প্রকৃত শক্তি হল আমাদের বিশ্বাস, অন্তর্দৃষ্টি, চেতনা, ফিলিস্তিনের লক্ষ্যে আনুগত্য ও শহীদ পরিবারগুলোর ত্যাগের মহান প্রস্তুতি।


গাজার জনগণ ও প্রতিরোধ ফ্রন্টের যোদ্ধাদের প্রশংসা

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ গাজার সাহসী জনগণের প্রতি দরুদ প্রেরণ করে বলেন, বিশ্বে তারা অতুলনীয়, গাজা ও পশ্চিম তীরের মানুষের মহানুভবতা ও সহিষ্ণুতার কথা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

 হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব এই পবিত্র যুদ্ধে অংশ নেয়া ইরাক ও ইয়েমেনের প্রতিরোধী যোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুকে ইসলামী বিশ্বের প্রথম ইস্যু হিসেবে পুনরায় উত্থাপনের জন্য একটি ঘটনা ঘটার প্রয়োজন ছিল এবং ৭ অক্টোবরের  তুফানুল আকসা অভিযান ছিল সেই ঘটনা।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি খুবই কঠিন ছিল এবং নতুন চরমপন্থি, মূর্খ ও দুষ্ট ইহুদিবাদী সরকার ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ফিলিস্তিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে বন্দি সমস্যা, কুদস সমস্যা, গাজা অবরোধ এবং পশ্চিম তীরে নতুন ইহুদিবাদী বসতি স্থাপন প্রকল্প।

 

তুফানুল আকসা, সম্পূর্ণ ফিলিস্তিনিদের অভিযান

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ তুফানুল আকসা অভিযানকে শতভাগ ফিলিস্তিনিদের সিদ্ধান্ত বলে গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, অভিযানটি শতভাগ ফিলিস্তিনিদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিক দিয়ে তুফানুল আকসা যুদ্ধ, ফিলিস্তিনিদের দ্বারা বাস্তবায়িত এবং এ বিষয়ে অন্যদের অজ্ঞতা প্রমাণ করে যে, এই যুদ্ধ সম্পূর্ণ ফিলিস্তিনিদের। প্রতিরোধের নেতা ও যোদ্ধারা হলেন প্রকৃত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ইমাম খোমেনির (রহ.) সময় থেকে ইমাম খামেনায়ীর (দা.বা.) সময় পর্যন্ত প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে সহায়তা করছে; কিন্তু প্রতিরোধ গোষ্ঠীর উপর তাদের অভিভাবকত্ব নেই এবং তুফানুল আকসার যুদ্ধ এই বাস্তবতাকে প্রমাণ করেছে।

 

ইহুদিবাদীরা আমার থেকে উত্তম জানে যে, ইসরাইল মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল

লেবাননের হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব ইহুদিবাদী সরকারের দুর্বলতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, তুফানুল আকসা যুদ্ধ ইহুদিবাদী সরকারে মধ্যে নিরাপত্তা, রাজনৈতিক, সামরিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং আধ্যাত্মিক ভূমিকম্পের সৃষ্টি করেছে। এই যুদ্ধ শত্রুর দুর্বলতা প্রমাণ করেছে এবং দেখিয়েছে যে, ইহুদিবাদী সরকার ইসরাইল মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল। ইহুদিবাদীরা আমার থেকে উত্তম জানে যে, ইসরাইল মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল।

ইহুদিবাদী শত্রুদের মন্ত্রীসভা গত এক মাসে এবং আগামী সপ্তাহগুলিতে যাই করুক না কেন,  তাদের সরকারের উপর তুফানুল আকসার কৌশলগত প্রভাবের পরিবর্তন করতে পারবে না।

ইহুদিবাদী সরকারকে সাহায্য করার জন্য আমেরিকার তড়িঘড়ি এই সরকারের দুর্বলতাকে প্রকাশিত করেছে। প্রথম দিন থেকেই ইহুদিবাদী সরকার আমেরিকার নিকট নতুন অস্ত্র দাবি করেছে, তাহলে এমন সরকার কিভাবে শক্তিশালী এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম? ইহুদিবাদী সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা সত্ত্বেও, এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে সক্ষম হয়নি।

 

তুফানুল আকসা, এটি একটি বুদ্ধিদীপ্ত এবং সাহসী সিদ্ধান্ত ছিল

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ তুফানুল আকসার মাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রে ইহুদিবাদী শত্রুর সাথে একটি নতুন ঐতিহাসিক পর্যায় সৃষ্টির প্রতি জোর দিয়ে বলেন, তুফানুল আকসা অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্তটি ছিল বিজ্ঞ, সাহসী এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং তা এই পরিমাণ আত্মত্যাগের যোগ্য। তুফানুল আকসা অভিযানের প্রথম থেকেই এটি পরিষ্কার যে, শত্রুরা বিভ্রান্ত। গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যা করেছে তা বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র থাকা যেকোনো সেনাবাহিনী করতে সক্ষম, কিন্তু তা সত্ত্বেও, এখনও পর্যন্ত এ যুদ্ধে তাদের কোন অর্জন নেই।

হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব উল্লেখ করেন, মনে হচ্ছে ইসরায়েলের মন্ত্রীসভা লেবানন ও ফিলিস্তিনের সব প্রতিরোধ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা হতে শিক্ষা গ্রহণ করেনি। ইহুদিবাদী শত্রুরা ২০০৬ সালের ভুলের পুনরাবৃত্তি করেছে এবং যখন উচ্চ-স্তরের লক্ষ্যগুলির বিষয়ে উত্থাপন করেছে তখন এড়িয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ২০০৬ সালে, তারা লেবাননের প্রতিরোধকে ধ্বংস করার এবং কোন আলোচনা বা বিনিময় ছাড়াই দুই বন্দিকে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিল, কিন্তু ৩৩ দিনেও তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।

গাজায় বড় ধরনের অভিযান চালাতে ইহুদিবাদী শত্রুর দ্বিধাগ্রস্তের প্রতি গুরুত্বারোপ করে সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ইহুদিবাদী শত্রুরা ভীতু, অক্ষম ও পরাজিত। ইসরায়েলিরা যা করছে তা হল গাজায় মানুষ হত্যা। সেই শহীদদের অধিকাংশই শিশু, নারী ও বেসামরিক জনগণ।

 

যে ব্যক্তি আজ নীরব, তার নিজের মানবতা সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করা উচিত

হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব গাজা যুদ্ধের জন্য আমেরিকাকে দায়ী মনে করেন এবং বলেন, ইহুদিবাদী সরকার শুধুমাত্র তাদের বাস্তবায়নের হাতিয়ার। আমেরিকা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা পাশ এবং এমনকি গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে বাধা দেয়। এই আমেরিকাই গাজা যুদ্ধ পরিচালনা করছে, তাই তাকে তার আগ্রাসনের মূল্য দিতে হবে।

তিনি মনে করিয়ে দেন, গাজা উপত্যকায় শত্রুদের অপরাধমূলক দৃশ্য প্রমাণ করে যে, গাজা জয়লাভ করবে এবং শত্রুরা পরাজিত হবে, আর ইহুদিবাদীদের অবশ্যই তা জানা উচিত। গাজায় যা কিছু ঘটছে, তা ইহুদিবাদী সরকারের বর্বরতার রূপ তুলে ধরে, যাকে পরাশক্তিরা এই অঞ্চলে রোপণ করেছিল।

নাসরুল্লাহ গুরুত্বারোপ করেন, তুফানুল আকসা যুদ্ধ অভিযান, আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও ইহুদিবাদী সরকারের বর্বরতার বিরুদ্ধে মানবতার যুদ্ধ। যে ব্যক্তি আজ নীরব, তার নিজের মানবতা সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

 লেবাননের হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব বলেন, বর্তমান সময়ে গাজার বিজয়ের অর্থ হল ফিলিস্তিনের জনগণ, বন্দি, পশ্চিম তীর, কুদস, আকসা এবং কেয়ামত চার্চ এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর বিজয়। গাজার বিজয় এখন মিশর, জর্ডান, সিরিয়া এবং আঞ্চলিক সকল দেশের জাতীয় স্বার্থ।

 

ইহুদিবাদী সরকারের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ কর

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ সরকারগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন: ইহুদিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দা ও বিবৃতি জারি করাই যথেষ্ট নয়, বরং ইহুদিবাদী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে এবং সেখানে তেল ও পণ্য রপ্তানি বন্ধ করতে হবে। আরব ও ইসলামি সরকারের উচিত যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা করা এবং ইহুদিবাদী সরকারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা। আরব সরকারগুলির অক্ষমতা কি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, তারা গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশ করাতে এবং সেখান থেকে আহতদের বের করতে পারে না?

তিনি ইরাক ও ইয়েমেনের প্রতিরোধীদের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইরাকের ইসলামি প্রতিরোধ তাদের দায়িত্ব পালন করছে এবং একটি নতুন ধাপে প্রবেশের ঘোষণা দিয়েছে। সমস্ত হুমকি সত্ত্বেও, ইয়েমেনি জনগণ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনের দক্ষিণে ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

 

শুরু থেকেই আমরা যুদ্ধে জড়িয়েছি

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ তার ভাষণের অপর অংশে ইহুদিবাদী সরকারের সাথে লেবাননের হিজবুল্লাহ’র সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেকেই বলছেন, সাইয়্যেদ যুদ্ধে অংশ নিতে চায়। আমরা শুরু থেকেই যুদ্ধে জড়িয়েছি।

আমাদের ফ্রন্টে যা ঘটছে তা গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত কার্যকর। কার্যত ৮ অক্টোবর থেকে, লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ সত্যিকারের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, যা কেবলমাত্র সীমান্তবর্তীরাই অনুভব করতে পারছে। লেবাননে আমাদের ফ্রন্টে যা ঘটছে তা এই সরকারের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

তিনি আরও বলেন, ৭ অক্টোবর শনিবার, শত্রুরা হতাশ হয়ে তাদের সেনাবাহিনীকে গাজায় নিয়ে যাওয়ার জন্য লেবাননের সীমান্ত থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। লেবাননের প্রতিরোধ অভিযান শত্রুকে কেবল তার সীমান্তে বাহিনী মোতায়েন রাখতেই নয়, বরং তাদের সংখ্যা বাড়াতেও বাধ্য করেছে। লেবানন ফ্রন্ট শত্রু বাহিনীর একটি বড় অংশকে অক্ষম করেছে, যাদের গাজা আক্রমণ করার কথা ছিল।

প্রতিরোধের নেতা মনে করিয়ে দেন, যদি আমাদের অবস্থান রাজনৈতিক সংহতি এবং বিক্ষোভ হত, তাহলে বর্তমানে ইসরায়েলিরা উত্তর সীমান্তে নিশ্চিন্তে থাকতো এবং তাদের বাহিনী গাজায় যেত। লেবানন ফ্রন্ট ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর এক তৃতীয়াংশকে ফিলিস্তিনের উত্তর সীমান্তে আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে এই বাহিনীর গাজায় পাঠানোর কথা ছিল। উত্তর সীমান্তে পাঠানো ইহুদিবাদী বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এলিট বাহিনী এবং যারা ইসরায়েলের নৌ-শক্তির অর্ধেক, যারা ভূমধ্যসাগরে আমাদের সামনে এবং হাইফার বিপরীতে অবস্থান করেছে।

 

লেবানন ফ্রন্টে, সম্ভাব্য সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় রয়েছে

হিজবুল্লাহ’র মহাসচিব লেবানন ফ্রন্ট বড় মাপের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার বাস্তব সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, লেবাননের ফ্রন্টে সম্ভাব্য সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় রয়েছে এবং যে কোন পরিস্থিতির বিকল্প ভাবা হয়েছে। দক্ষিণ লেবাননে প্রতিরোধ অভিযান শত্রুদের কাছে একটি খোলা বার্তা, তারা যেন ঐতিহাসিক বোকামিতে জড়ানোর কথা না ভাবে। লেবানন ফ্রন্টের পরিস্থিতি এবং সেখানকার উত্তেজনা বৃদ্ধি, গাজার ঘটনা এবং লেবাননের প্রতি শত্রুদের আচরণের উপর নির্ভরশীল।

তিনি আরও বলেন, লেবানন ফ্রন্টের দিকে দখলদারদের বিমান বাহিনীর এক চতুর্থাংশ এবং প্রায় অর্ধেক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠানো হয়েছে  এবং কয়েক হাজার বসতি অন্যান্য এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এটি লেবানন ফ্রন্ট সক্রিয় হওয়ার আলামত।

 

আঞ্চলিক যুদ্ধ সংঘটিত হলে, আমেরিকা সবচেয়ে বড় পরাজয় দেখবে

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, গাজার ঘটনা আমাদের ইমানকে আরও শক্তিশালী করে। আমরা শত্রুকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি এবং আমরা কখনোই হার মানবো না।

তিনি মার্কিনীদের সতর্ক করে স্মরণ করিয়ে দেন যে, মার্কিনীদের উদ্দেশ্যে বলছি, তোমাদের নৌবহর হতে আমরা ভীত নই এবং কখনই তা আমাদের ভীত করবে না এবং আমরা এর মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। আমেরিকানদের উদ্দেশ্যে বলছি, আঞ্চলিক যুদ্ধ সংঘটিত হলে, তোমাদের স্বার্থ ও সৈন্যদের বলি হবে এবং তোমরা সবচেয়ে বড় পরাজয় দেখবে। আমেরিকানরা তোমাদের উদ্দেশ্যে বলছি, এই যুদ্ধ স্থিতিশীলতা, ধৈর্য, সহনশীলতা এবং শত্রুর লক্ষ্য অর্জনে বাধা প্রদানের যুদ্ধ।

 

গাজা বিজয়ী হবে

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ জোর দিয়ে বলেন, এই যুদ্ধ স্থিতিশীলতা, ধৈর্য, সহনশীলতা, সঞ্চয় অর্জন এবং শত্রুর লক্ষ্য অর্জনে বাধা প্রদানের যুদ্ধ। গাজায় আগ্রাসন বন্ধে আমাদের কাজ করতে হবে এবং গাজার বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

 তিনি ফিলিস্তিনের জনগণ এবং প্রতিরোধ যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের এখনও সময় প্রয়োজন। কিন্তু আমরা সম্মানের সাথে বিজয়ী হব। আমরা ২০০৬ সালে বিজয়ী হয়েছি এবং গাজার ক্ষেত্রেও এভাবে বিজয়ী হব। অতএব, পশ্চিম তীরের প্রতিরোধ থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজার বিজয় হবে। ফিলিস্তিনের বিজয় হবে। আমাদের দায়িত্ব রয়েছে, আমাদের অধ্যবসায় এবং ধৈর্য একটি সুনির্দিষ্ট বিজয়ের দিকে ধাবিত করবে।

ইহুদিবাদী সরকারের সাথে ৩৩ দিনের যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ৩৩ দিনের যুদ্ধে যখন আমাদের কোন সুস্পষ্ট সীমানা ছিল না। ইমাম খামেনায়ী আমাদেরকে বলেছিলেন, তোমরা বিজয়ী হবে এবং ভবিষ্যতে নির্ধারকের ভূমিকা রাখবে। ইমাম খামেনায়ী বলেছেন, গাজার বিজয় হবে। আমি গাজার জনগণকে বলছি, তোমরা অবশ্যই বিজয়ী হবে এবং আমরা শীঘ্রই এই বিজয় উদযাপন করবো।#176A