ইহুদিবাদী ইসরাইলের ২০০ বড় ব্যবসায়ীর একটি দল ওই দাবী তোলার ব্যাপারে বলেছে: গভীর অর্থনৈতিক সংকট থেকে ইসরাইলকে বাঁচানোর লক্ষে তারা ওই পদক্ষেপ নিয়েছে। পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, ইসরাইলের বিখ্যাত ব্যবসায়ী ইয়াল ওয়াল্ডম্যান এ প্রসঙ্গে বলেছেন: বর্তমান মন্ত্রিসভা ইসরাইলের শত্রু। কাজেই আমাদের উচিত আগাম নির্বাচনের কাজ করা।
ওয়াল্ডম্যান আরও বলেছেন, ইসরাইলি ব্যবসায়ীরা নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তার মন্ত্রিসভায় থাকা নেসেট সদস্যদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন।
গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে আট মাসেরও বেশি সময় কোনো ফলাফল ও অর্জন ছাড়াই পার হয়ে গেছে। ইসরাইল এখন ক্রমশ বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ সংকটে বিশেষ করে বাজেট ঘাটতিতে নিমজ্জিত হচ্ছে।
ইতোপূর্বে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে এপ্রিলে শেষ হওয়া বিগত অর্থবছরে এই সরকারের বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
এই সময়কালে ইহুদিবাদী ইসরাইল গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ, যুদ্ধাপরাধ, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, সাহায্য সংস্থায় বোমা হামলা এবং এ অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার চাপিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই অর্জন করতে পারেনি।
ইহুদিবাদী মিডিয়া জেরুজালেম পোস্ট গতকাল (রবিবার) জানিয়েছে: গাজা যুদ্ধের কারণে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক আঘাত এসেছে কৃষি খাতে। দখলদার ইসরাইলের কৃষকদের ওপর যুদ্ধের আঘাত মারাত্মকভাবে লেগেছে বলে পত্রিকাটি জানায়।
এদিকে ইহুদিবাদী আরেক সংবাদপত্র "ক্যালকালিস্ট" লিখেছে, ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক পরিসংখ্যান অনুসারে, গাজা যুদ্ধে ইহুদিবাদী সরকারের ৫১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ হবে।
ক্যালকালিস্ট ইহুদিবাদী ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের গাজা যুদ্ধে ৫১ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পূর্বাভাসকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে ভবিষ্যতে যা-ই ঘটুক না কেন দখলদার ইসরাইল গাজা যুদ্ধে হেরে গেছে। আট মাসেরও বেশি সময় ধরে বছরের পর বছর অবরুদ্ধ একটি ছোট এলাকায় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে পরাজিত করতে পারে নি তারা। গাজায় সংঘটিত প্রকাশ্য হত্যাযজ্ঞের কারণে বিশ্ব জনমতও হারিয়েছে ইসরাইল।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের নয়া আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং ৮৫ হাজারের বেশি আহত হয়েছে।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের পরিকল্পনায় ইসরাইল গঠনের নীল-নকশা তৈরি হয়। তারপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে অভিবাসনের মাধ্যমে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে ইসরাইলের অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে বংশ নির্মূল করার টার্গেট নিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর বেপরোয়া গণহত্যা চালিয়ে এসেছে। ফিলিস্তিনীদের সমগ্র ভূমি দখলের জন্য ইসরাইল অসংখ্যবার গণহত্যা চালিয়েছে।#