‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শুক্রবার

১৮ নভেম্বর ২০১৬

১২:১১:৪৯ PM
792685

নাইজেরিয়ায়;

আহলে বাইতের (আ.) অনুসারীদের উপর হামলার নিন্দায় মাজমার বিবৃতি

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, নাইজেরিয়ায় আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের উপর সেনা ও পুলিশ বাহিনীর নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে এ হামলার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানানো হয়েছে।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) এর চেহলাম (চল্লিশা) উপলক্ষে আয়োজিত শোকানুষ্ঠানে নাইজেরিয়ার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহিংস হামলার প্রতিবাদে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এ পাশবিক পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা)। মানবতা বিরোধী এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা এবং এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত বিশ্বাসঘাতক ও বর্বর লোকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে দাবী তোলার জন্য আন্তর্জাতিক ইসলামি সংস্থাগুলোর প্রতি আহবান জানানো হয়েছে এ বিবৃতিতে।

বিবৃতির মূল অংশ:

مَنْ قَتَلَ نَفْسَا بِغَیرِ نَفْسٍ أوفَسادٍ فِی الأَرضِ فَکانَّما قَتَلَ النَّاسَ جمیعاً وَ مَنْ أَحْیاها فَکأَنَّما اَحیا النَّاسَ جمیعاً

‘যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে, আর যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে’। (মায়িদাহ : ৩২)

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও স্বাধীনতার শ্লোগানধারী দেশগুলোর রহস্যজনক নিরবতার ছায়ায় আবারও নাইজেরিয়ার সেনা ও পুলিশ কর্তৃক এদেশের আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের উপর হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতার সাক্ষী রইলো বিশ্ববাসী।

নিলর্জ্জ এ সকল অপরাধীরা, শহীদদের নেতা ইমাম হুসাইন (আ.) এর শাহাদত ও তার চেহলামে শোকার্ত লোকদের রক্ত ঝরিয়েছে নির্দিধায়। নিহতদের মাঝে রয়েছে বহু নিরাপরাধ নারী ও শিশু। তাদের হামলায় আহত হয়েছে আরো অনেক মানুষ।

নাইজেরিয়া ইসলামি মুভমেন্ট ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, শান্তিপূর্ণ শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের উপর হামলা চালিয়ে ঠান্ডা মাথায় তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে এদেশের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

নাইজেরিয়ের একগুয়ে ও গোঁড়া সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আলে সৌদ ও পথভ্রষ্ট ওয়াহাবি ফের্কা এবং তাদের এজেন্টদের উস্কানিতে বিগত কয়েক বছর ধরে আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের প্রতি তাদের ঘৃণা, বিদ্বেষ ও শত্রুতা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। এমনকি ওয়াহাবি ও সশস্ত্র তাকফিরি গ্রুপগুলোর সাথে সম্পৃক্ত পেশ ইমামরা তাদের বিদ্বেষপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যগুলোতে সর্বদা সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদেরকে শিয়া মাযহাবের অনুসারীদের বিরুদ্ধে উস্কানী দিয়ে থাকে।

শিয়াদেরকে দমনের এ ঝাপটা, গতবছর কাদুনা প্রদেশের জারিয়া শহরের একটি ইমামবাড়িতে সেনাবাহিনীর হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয়। ঐ দিন ইমামবাড়ি ও নাইজেরিয়া ইসলামি মুভমেন্টের নেতা শেইখ ইব্রাহিম যাকযাকির বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় আটক করে নিয়ে যায় সেনারা। হামলায় ১ হাজারেরও বেশী মানুষ হতাহত হয়। তাদের মধ্য থেকে ৩৫০ জনকে ঐ সময় গোপনে গণকবরে দাফন করেছিল আগ্রাসী সৈন্যরা।

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে আলেমগণ, ইসলামি ও মানবাধিকার সংস্থাসমূহের প্রতি আবেদন জানায়, যাতে তারা মানবতা বিরোধী এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত বিশ্বাসঘাতক ও  বর্বর লোকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানায়। পাশাপাশি মানবাধিকারসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্বের সকল স্বাধীনচেতা ও সত্যপন্থী মানুষের প্রতি আহবান জানায়, যাতে তারা এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে এর নেপথ্যে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। শেইখ ইব্রাহিম যাকযাকিসহ নিরাপরাধ রাজনৈতিক বন্দীদের অনতি বিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক এবং এ ধরণের মানবতা বিরোধী নৃশংস ঘটনার আর যেন পূনরাবৃত্তি না ঘটে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নাইজেরিয়া সরকারের প্রতি আন্তরিক আহবান জানাই।

و سَیـعـلـم الذین ظلموا أیّ منقلب ینقلبون.

‘…নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ’। (শোআরা : ২২৭)

সাদাকাল্লাহুল আলিইয়্যুল আযিম