পার্সটুডে জানিয়েছে, চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেটের মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এক বিবৃতিতে "দুঃখ" প্রকাশ করে বলেছে: চীনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তাইওয়ান ইস্যুকে দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। আমেরিকার আগুন নিয়ে খেলা উচিত হবে না।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাইওয়ানকে চীনের "অভ্যন্তরীণ বিষয়" হিসাবে অভিহিত করে বলেছে যে অন্য দেশের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার নেই।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব গত শুক্রবার সিঙ্গাপুরে "শাংরি-লা ডায়ালগ" নিরাপত্তা সম্মেলনে তার বক্তৃতায় দাবি করেছেন যে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয় এবং চীন এখানে হুমকি সৃষ্ট করেছে।
হেগসেট আরও বলেন যে তাইওয়ানের ব্যাপারে চীনের পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ এবং আমাদের অংশীদার ও মিত্রদেরকে তাইওয়ানকে রক্ষা করার জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।"
তিনি বলেন, বেইজিং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের জন্য প্রতিদিন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
চীন তাইওয়ানকে তার ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে এবং সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে প্রয়োজনে তারা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে তাইওয়ানকে চীনের সথে একিভুত করবে। বেইজিং তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়াও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে, তাইওয়ান সরকার বেইজিংয়ের কর্তৃত্ব প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে কেবল দ্বীপের জনগণই এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।
ওয়াশিংটন-বেইজিং বাণিজ্য বিরোধ কি সমাধানের দ্বারপ্রান্তে?
রবিবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্ট বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে আলোচনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে অচলাবস্থার অবসান ঘটতে পারে। স্কট বেস্যান্ট মার্কিন সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে ব্যবধান শীঘ্রই দূর হতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার চীনকে উচ্চ বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস করার জন্য গত মাসে জেনেভায় সম্পাদিত চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শুক্রবার জানিয়েছে যে গাড়ি এবং চিপ তৈরিতে প্রয়োজনীয় বিরল উপাদান এবং অন্যান্য উপকরণের রপ্তানি লাইসেন্স প্রদানে চীনের বিলম্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হতাশ করেছে। এ ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি বলেছিলেন যে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত হয়ে গেছে এবং সম্ভবত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শি জিনপিংয়ের সরাসরি সাক্ষাতের প্রয়োজন হবে।
যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর ১৪৫% শুল্ক আরোপ করে এবং চীন প্রতিশোধ হিসেবে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫% শুল্ক বৃদ্ধি করে।
তবে উভয় পক্ষ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক বাস্তবায়ন বিলম্বিত করতে এবং বাণিজ্য বিরোধ সমাধানের জন্য আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে।#
Your Comment