১১ আগস্ট ২০২৫ - ১৯:০৬
নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের গাজা অভিযানের নিন্দা

ইসরায়েলের গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়ার পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা।রবিবার (১০ আগস্ট) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরায়েল।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলের গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়ার পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা।রবিবার (১০ আগস্ট) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরায়েল।



বৈঠকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ অন্যান্যরা সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের ঝুঁকি’ তৈরি করছে।

ডেনমার্ক, গ্রিস ও স্লোভেনিয়ার সঙ্গে একযোগে তারা পরিকল্পনাটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। বলেন, এটি ‘জিম্মিদের ফেরানোর জন্য কিছুই করবে না, বরং তাদের জীবনকে আরও ঝুঁকির মুখে ফেলবে।’

পরিষদের অন্যান্য সদস্যও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চীন গাজার মানুষের ওপর সমষ্টিগত শাস্তিকে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করে। আর রাশিয়া বেপরোয়া ভাবে সংঘাত বাড়ানোর বিরুদ্ধে সতর্ক করে।

বৈঠকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনচা বলেন, ‘এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, তা সম্ভবত গাজায় আরেকটি বিপর্যয়ের জন্ম দেবে, যা গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে এবং আরও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাবে।’

জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয়ের রমেশ রাজাসিংহাম বলেন, গাজার ক্ষুধা সংকট আর আসন্ন নয়, বরং এটি সরাসরি অনাহার।’

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সমর্থন জানায়। মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া বৈঠকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবিরামভাবে জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ শেষ করতে কাজ করছে। এই বৈঠক সেই প্রচেষ্টাকে দুর্বল করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, যুদ্ধ আজই শেষ হতে পারে যদি হামাস জিম্মিদের ছেড়ে দেয়। অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ তোলেন যে, তারা এই বৈঠককে ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করার জন্য ব্যবহার করছে।

পরে নেতানিয়াহুর দফতর জানায় যে তিনি ইসরায়েলের পরিকল্পনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু  বলেন, পরিকল্পিত অভিযান খুব দ্রুত চলবে এবং গাজাকে হামাসের হাত থেকে মুক্ত করবে।

তিনি আরও দাবি করেন, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদেরকেই পরিকল্পিতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে। তিনি অস্বীকার করেন যে, ইসরায়েল গাজার মানুষকে অনাহারে রাখছে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু আরও বলেন, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) গাজা সিটি এবং আল-মাওয়াসি সংলগ্ন মধ্যাঞ্চলের দুটি অবশিষ্ট হামাস ঘাঁটি ধ্বংস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গাজায় অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, আমরা যদি কিছুই না করি, তবে  তাদের বের করে আনতে পারব না। জিম্মিদের মধ্যে ২০ জন এখনও জীবিত বলে ধারণা করা হয়।

ইসরায়েলি নেতা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দিকেও তীর ছোড়েন। অভিযোগ করেন, তারা হামাসের প্রচারণায় প্রভাবিত হয়েছে। তিনি বিশ্বজুড়ে পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা গাজার অপুষ্ট শিশুর কিছু ছবিকে ‘নকল’ বলে অভিহিত করেন।

যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। তবে নেতানিয়াহু বলেন, গত দুই দিন ধরে সেনাবাহিনীকে বিদেশি সাংবাদিক আনার নির্দেশ কার্যকর রয়েছে।

এদিকে হাজারো বিক্ষোভকারী ইসরায়েলজুড়ে রাস্তায় নেমে সরকারের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। তাদের আশঙ্কা, এটি জিম্মিদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha