আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ১৯৩৩ সালের মন্টেভিডিও কনভেনশনের শর্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রের কিছু মানদণ্ড ফিলিস্তিন পূরণ করলেও এখনো সুস্পষ্ট ভূখণ্ড নির্ধারিত হয়নি।
ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকাকে তাদের রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে থাকলেও ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে এসব অঞ্চল ইসরায়েল দখল করে নেয়। তাছাড়া পশ্চিম তীর ও গাজা ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকায় ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র গঠন জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নেতৃত্ব সংকট ফিলিস্তিন রাজনীতির আরেকটি বড় সমস্যা। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে ২০০৬ সালে, ফলে তরুণ প্রজন্মের অনেকেই কখনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রায় ৯০ বছর বয়সী ও দুর্বল, জনপ্রিয় নেতা মারওয়ান বারগুতি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী, আর হামাসকে আন্তর্জাতিক মহল গ্রহণযোগ্য মনে করে না। ফলে রাজনীতিতে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।
জনমত জরিপে দেখা গেছে, অনেক ফিলিস্তিনি বারগুতিকে ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে দেখতে চান। তবে আন্তর্জাতিক মহল ও আরব রাষ্ট্রগুলো চাইছে, হামাস যেন গাজা শাসন থেকে সরে গিয়ে একটি টেকনোক্র্যাটিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। এই অভ্যন্তরীণ পুনর্মিলন ছাড়া আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কেবল প্রতীকী থেকে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্রিটিশ সরকারি কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন, শুধু স্বীকৃতির প্রতীকী তাৎপর্য যথেষ্ট নয়।’ অর্থাৎ এই প্রতীকী স্বীকৃতির বাস্তবায়ন নির্ভর করছে গাজা ও পশ্চিম তীরের একত্রীকরণ এবং একটি কার্যকর নেতৃত্বের ওপর, যা এখনো সুদূরপরাহত।
ফিলিস্তিনি আইনজীবী দিয়ানা ভুট্ট বলেন, ‘আমি চাই এই দেশগুলো যেন হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে। রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে, তারা গাজায় চলমান হত্যাকাণ্ড বন্ধের জন্য কিছু করুক।’
সবশেষে বলা যায়, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া নিঃসন্দেহে ইতিবাচক এক অগ্রগতি। তবে কার্যকর নেতৃত্ব, অভ্যন্তরীণ ঐক্য, স্পষ্ট সীমান্ত ও চলমান সহিংসতা বন্ধ না হলে এই স্বীকৃতি বাস্তবে পরিণত হওয়া কঠিন। ফিলিস্তিনিদের কাছে তাই সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে রাজনৈতিক ঐক্য ও সহিংসতা থেকে মুক্তি, যা একটি কার্যকর রাষ্ট্র গঠনের মূল শর্ত।
Your Comment