২ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১৮:১৯
নেতানিয়াহুর ক্ষমা প্রার্থনা !

নেতানিয়াহুর দাবি,দেশের মঙ্গলের কথা ভাবলে এই পদক্ষেপকে সমর্থন করা উচিত।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বহুদিন ধরে চলমান দুর্নীতির মামলাগুলো থেকে অব্যাহতি পেতে প্রেসিডেন্ট ইসাক হেরজগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।


রোববার এক ভিডিওবার্তায় তিনি জানায়, তার আইনজীবীরা ইতোমধ্যে ক্ষমা চেয়ে লেখা চিঠি প্রেসিডেন্টের অফিসে জমা দিয়েছে। নেতানিয়াহুর দাবি, “দেশের মঙ্গলের কথা ভাবলে এই পদক্ষেপকে সমর্থন করা উচিত।”

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে একে “অপ্রত্যাশিত অনুরোধ” বলে মন্তব্য করেছে। প্রেসিডেন্ট হেরজগ জানিয়েছে, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; তাই প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও তথ্য যাচাইয়ের পরই তিনি সিদ্ধান্ত দেবে।

ভিডিওবার্তা প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনেও মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানায়।

নেসেটের বিরোধীদলীয় এমপিরাও বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিরোধী এমপি নামা লাজিমি বলে, “প্রেসিডেন্ট যদি ক্ষমা মঞ্জুর করে, তবে ইসরায়েল বানানা রিপাবলিকে পরিণত হবে।”

বিক্ষোভকারীরা “ক্ষমা মানে বানানা রিপাবলিক” স্লোগানে এলাকা মুখরিত করে তোলে। অনেকে নেতানিয়াহুর কুশপুতুল ও ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দেয়।

মানবাধিকারকর্মী শিকমা ব্রেসলার বলে, “নেতানিয়াহু দেশকে গভীর সংকটে ফেলেছে। এখন কোনো দায় না নিয়েই সে বিচার থেকে রেহাই চায়, এটা জনগণ মেনে নেবে না।”

প্রধান বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ বলে, “সে কখনো অপরাধ স্বীকার করেনি, অনুতাপও নেই। তার উচিত রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানো। ক্ষমা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জেরুজালেম জেলা আদালতে তিনটি দুর্নীতির মামলা চলছে। ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর অভিযোগ অনুযায়ী, সে ও তার স্ত্রী ধনী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দামী গহনা, মদ ও সিগার উপহার হিসেবে নিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

আরেক মামলায় অভিযোগ, গণমাধ্যমে ইতিবাচক প্রচার পেতে তিনি মিডিয়া মালিকদের অবৈধ রাষ্ট্রীয় সুবিধা দিয়েছে।

তৃতীয় মামলায় বলা হয়, টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান বেজেককে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে তিনি ঘুষ নিয়েছিল।

প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকায় সে বিচারিক প্রক্রিয়া থামিয়ে রাখতে পেরেছিল। তবে ২০২১ সালে বিরোধী দলে যাওয়ার পর মামলাগুলো আবার সক্রিয় হয়।

৭ অক্টোবরের যুদ্ধের পর বিচারমন্ত্রী মামলাগুলো সাময়িক স্থগিত রাখলেও যুদ্ধবিরতির পর আবার বিচার শুরু হয়েছে। ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকা নেতানিয়াহুই দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha