আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): বহু দেশ এখন ইসরায়েলের প্রতি নরম নয়, বরং রাজনৈতিক সম্পর্কেও দূরত্ব বজায় রাখছে। আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতেও ইসরায়েলবিরোধী ভোট বাড়ছে, আর সাধারণ মানুষের চোখে দেশটি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠনগুলো ইসরায়েলকে একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক বয়কটের ডাক দিচ্ছে। এসব উত্তাল জনমতের কারণে ইসরায়েলের বৈশ্বিক বৈধতা সংকট এখন স্পষ্ট।
এমন পরিস্থিতিতে তেল আবিব বুঝতে পারছে বিশ্বমঞ্চে তাদের ভাবমূর্তি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যটন ও বিনিয়োগক্ষেত্রেও এই নেতিবাচক ইমেজ বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে দখলকৃত ফিলিস্তিনকে আর আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে দেখা হচ্ছে না।
এই সংকট কাটাতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা নতুন একটি ব্যয়বহুল প্রচার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা'আরের প্রস্তাব অনুযায়ী ২০২৬ সালের বাজেট থেকে ২.৩৫ বিলিয়ন শেকেল বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার বিশ্বব্যাপী জনমত বদলে দেওয়ার ক্যাম্পেইনে খরচ করা হবে।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অর্থ ব্যয় হবে ব্যাপক সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণা, আন্তর্জাতিক এনজিওর সঙ্গে কাজ, এবং বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অধিকৃত অঞ্চলে ভ্রমণের ব্যবস্থা তৈরিতে। ইউরোপ ও আমেরিকায় বিশেষভাবে প্রচার বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, কারণ এসব অঞ্চলে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ইনফ্লুয়েন্সার, ইউটিউবার ও অনলাইন কর্মীদের বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক দিয়ে ইসরায়েলের পক্ষে বয়ান ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের মাধ্যমে দখলকৃত ফিলিস্তিনকে আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল হিসেবে উপস্থাপন করাই ক্যাম্পেইনের অন্যতম লক্ষ্য।
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর গাজা সংক্রান্ত মানবিক সংকটের রিপোর্টকে দুর্বল করা, প্রশ্নবিদ্ধ করা ও ‘ইসরায়েলের বিপক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে প্রচার করাও এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
সমালোচকরা মনে করেন, এই প্রচারণা দেখাচ্ছে ইসরায়েল তাদের রাজনৈতিক বা সামরিক আচরণ পরিবর্তন করতে আগ্রহী নয়; বরং অত্যন্ত ব্যয়বহুল জনসংযোগ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্বজনমতের ধারণা বদলাতে চায়। তবে দখলকৃত ভূখণ্ডের ভেতরে অনেকেই মনে করেন, বিপুল অর্থ ব্যয় করেও ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত ভাবমূর্তি পুনর্গঠন সহজ হবে না, কারণ দেশটি ইতিহাসের অন্যতম বড় বৈশ্বিক নিন্দার মুখোমুখি।
Your Comment