‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শুক্রবার

৪ নভেম্বর ২০২২

৪:০১:১৩ AM
1320090

যদি মানুষের মাঝে এ বিশ্বাস থাকে, যে অর্থ তার কাছে রয়েছে তা আল্লাহর, এমতাবস্থায় কোন দুস্থ-অভাবীকে তা দান করা তার জন্য খুব কষ্টের কিছু হবে না। সে বলে, এ অর্থ অন্য কারো, তাকেই ফেরত দিচ্ছি। মহান আল্লাহ এ অর্থ আমার কাছে গচ্ছিত রেখেছেন, যাতে আমি তা অন্য কাউকে দান করার মাধ্যম সওয়াব হাসিল করতে পারি। তাহলে আমি কেন তা করব না?

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): হাওযা ইলমিয়া কোমের প্রখ্যাত উস্তাদ, বিশিষ্ট দার্শনিক, বিশিষ্ট নৈতিকতা বিষয়ক উস্তাদ এক সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় আত্মার সকল পীড়ার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র বলে দিয়েছেন।

কতই না ভাল হয়, যদি মানুষ এমন কোন ঔষধের সন্ধান পায় যার মাধ্যমে সে রুহ ও আত্মা সংশ্লিষ্ট সকল রোগের চিকিৎসা করতে পারবে। সেটা আঞ্জাম দেওয়া যতটাই কষ্টকর হোক না কেন তা অত্যন্ত মূল্যবান। ওষধটি হল, মানুষ সূক্ষ্ম চিন্তা করে এ ইয়াকীনে পৌঁছুবে যে, আমাদের কাছে যা কিছু আছে তা সবই মহান আল্লাহর, যা কিছু আমাদের হাতে রয়েছে তার সবটাই গচ্ছিত আমানত, একেবারে সহজ ভাষায়, সে জানবে তার কাছে যা কিছু আছে তা তার পৈতৃক সম্পত্তি নয় বরং সবই আল্লাহর নিয়ামত। কল্যাণকর যা কিছু সে লাভ করে তার সবটাই মহান আল্লাহর অনুগ্রহ, আমরা যে সকল ভাল কাজ করি তার তৌফিক মহান আল্লাহই প্রদান করেছেন, যদি কোন গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি সেটাও মহান আল্লাহর তৌফিক যে, আমরা শয়তানের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি।

কিন্তু যদি কোথাও আমাদের প্রতিরোধ ভেঙ্গে যায়, আমাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায় এবং আমরা পরাজিত হই -সেটা আমাদেরই ব্যর্থতা। মানুষ যদি এ বিশ্বাস অর্জন করত পারে তাহলে তার আত্মা ও রুহ সংশ্লিষ্ট সকল রোগ থেকে মুক্তি লাভ করবে; রিয়া (লোক দেখানো), হিংসা ও কৃপণতা থেকে মুক্তি পাবে।

যদি মানুষের মাঝে এ বিশ্বাস থাকে, যে অর্থ তার কাছে রয়েছে তা আল্লাহর, এমতাবস্থায় কোন দুস্থ-অভাবীকে তা দান করা তার জন্য খুব কষ্টের কিছু হবে না। সে বলে, এ অর্থ অন্য কারো, তাকেই ফেরত দিচ্ছি। মহান আল্লাহ এ অর্থ আমার কাছে গচ্ছিত রেখেছেন, যাতে আমি তা অন্য কাউকে দান করার মাধ্যম সওয়াব হাসিল করতে পারি। তাহলে আমি কেন তা করব না?

যদি মনে রাখি সবই মহান আল্লাহর তাহলে তা প্রদান করা সহজ হবে, কিন্তু যদি আমরা কারূনের মত মনে করি যে, ((إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَىٰ عِلْمٍ عِنْدِي)) ‘আমি এই ধন আমার নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছি।’ [কাসাস : ৭৮] আমার সম্পত্তি এমনি এমনি আসেনি! তাহলে তা দান করা কষ্টকর হবে।

যদি মানুষ কোন ইবাদত আঞ্জাম দানে সফল হয়, তাই তা যে ধরণেরই ইবাদত হোক না কেন, যদি সে এ বিশ্বাস রাখে যে, মহান আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত তৌফিকের কারণেই সে সফল হয়েছে তা ছিল মহান আল্লাহর এক দান ও হাদিয়া; চাই তা নামায হোক বা রোজা, কল্যাণকর কোন কাজ হোক বা কোন গবেষণাধর্মী কাজ, কোন আবিষ্কার হোক বা সৃষ্টিকূলের সেবা… যখন তা আল্লাহরই তৌফিকে সম্ভব হয়েছে তখন আমার অহংকার ও গর্ব করার কি আছে?

এ নিয়ে কি গর্ব করব যে, মহান আল্লাহ আমাকে খুব ভাল নিয়ামত প্রদান করেছেন?! মহান আল্লাহ্ প্রদান করেছেন, এতে আমার গর্ব করার কি আছে? আল্লাহ প্রদান করেছেন, অতএব, শুকরিয়া আদায় করো।

যদি সকল নিয়ামতের প্রতি আমাদের দৃষ্টি এমন থাকে যে, মহান আল্লাহ যে সকল নিয়ামত আমাকে প্রদান করেছেন তা আমানত ও কর্য হিসেবে দিয়েছেন, তিনি এ প্রদানের মাধ্যমে আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, যেন এর থেকে কিছু সওয়াব প্রাপ্ত হই এবং দুনিয়ার কিছু আনন্দ ও পরকালীন কিছু পূণ্য আমার নসিবে জোটে, সেক্ষেত্রে আমাদের উচিত হবে সদা-সর্বদা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা এবং এ নিয়ামত এমন সব কাজে ব্যয় করা যাতে মহান আল্লাহ অধিক সন্তুষ্ট হন।

কিন্তু যদি আমাদের ভাবনা এমন হয় যে, এগুলো আমারই এবং এগুলো প্রাপ্ত হওয়ার কারণে আমরা অহংকার করি, তাহলে সমস্যা দেখা দেবে; তখন অন্যরা যে সকল নিয়ামত প্রাপ্ত হয়েছে তা দেখে ঈর্ষান্বিত হব, অথচ আমাদের বলা উচিত ছিল যে, মহান আল্লাহ এ নিয়ামত তাকে প্রদান করার ইরাদা করেছেন, যদি তিনি নিজ ইচ্ছায় কাউকে কিছু প্রদান করে থাকেন তাতে আমার কি? আমার বলা উচিত, হে আল্লাহ আমাকেও তা প্রদান করুন!#176