‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

৭:০৩:৩৬ PM
1437139

পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের গুরুত্ব

পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে যখন নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যাকায় ইহুুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে তখন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান নতুুন করে লেবানন এবং সিরিয়া সফর করেছেন। এছাড়া কথা রয়েছে যে তিনি দামেস্ক থেকে কাতারও সফর করবেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এমন সময় পশ্চিম এশিয়া অঞ্চল সফর করছেন যখন গাজা যুদ্ধের উত্তেজনা নতুুন মাত্রায় পৌছেছে। গাজায় ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী অব্যাহত গণহত্যা চালিয়েও তার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্থ্যাৎ ইসলামি প্রতিরোধকামী আন্দোলন হামাসকে ধ্বংস এবং গাজার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে পারে নি। তেল আবিব শাসক গোষ্ঠী তাদের পরাজয়ের ক্ষতিপূরণ দিতে তারা এখন রাফায় বর্বরতা চালানোর হুমকি দিচ্ছেন। 

এমতাবস্থায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈরুতে গিয়ে লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ, অন্যান্য প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর নেতা এবং লেবাননের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং গাজা ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এই বৈঠকে লেবাননের হিজবুল্লাহর মহাসচিব জোর দিয়ে বলেছেন যে ইহুদিবাদী শত্রুরা এখন এক বিরাট কৌশলগত সংকটে রয়েছে এবং তাদের চলমান আগ্রাসনে তারা কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।

এই বৈঠকে আমির আবদুল্লাহিয়ান মনে করিয়ে দেন যে প্রস্তাবিত রাজনৈতিক উদ্যোগে প্রধান দল হিসেবে প্রতিরোধের গ্রহণযোগ্যতা ফিলিস্তিনি ভূখন্ড এবং এ অঞ্চলে প্রতিরোধের ভূমিকা ও তাদের দৃঢ় অবস্থানের ব্যাপারে ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর নেতাদের সাথেও বৈঠকে অংশ নেন। ইসলামী জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আন-নাখালা, হামাসের অন্যতম নেতা ওসামা হামদান এবং ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য পিপলস ফ্রন্টের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল "জামিল মাজেরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি গাজা এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞ বন্ধ করার অগ্রাধিকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।  এছাড়া গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে প্রস্তাবিত রাজনৈতিক উদ্যোগ পরিচালনায়, গাজার গৃহহীন জনগণকে সহায়তা প্রদান এবং ইহুুদি বন্দীদের বিনিময়ে ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্ত করার বিষয়ে  ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করার ওপর গুরুত্ব দেন।

যদিও ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সব সময় এই যুদ্ধ বন্ধ করার এবং গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর গণহত্যার প্রতি আমেরিকার অন্ধ সমর্থন অবিলম্বে অবসানের উপর জোর দিয়ে আসছে।  তবে আমির আবদুল্লাহিয়ানের নতুন আঞ্চলিক সফরকে একটি নতুন বার্তা হিসাবে মূল্যায়ন করা উচিত। 

ইরান নিজেকে রক্ষা করার এবং দখলদার ও আগ্রাসীদের মোকাবেলা করার জন্য প্রতিরোধের বৈধ অধিকারের প্রতি তার সমর্থনের কথা বারবার বলে আসছে এবং এ বিষয়ে অনেকবার জোর দিয়ে আসছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে প্রতিরোধ গোষ্ঠীর কাজ ও কার্যক্রমে তেহরান হস্তক্ষেপ করছে।

প্রকৃতপক্ষে, এই অঞ্চলে প্রতিরোধের অক্ষ লেবাননের হিজবুল্লাহ আন্দোলন থেকে শুরু করে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলন এবং ইরাক ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকামী সংগঠন তাদের প্রত্যেকেই তাদের সামর্থ্য ও সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন সামরিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী এবং মার্কিনীদের মোকাবিলা করে চলেছে।#