১৮ মে ২০২৫ - ২৩:৪২
Source: Parstoday
তেহরান ডায়ালগ ফোরামের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব কী?

পার্স টুডে- বিশ্বের ৫৩টি দেশের ২০০ জন প্রতিনিধির অংশগ্রহণে তেহরান ডায়ালগ ফোরামের (টিডিএফ) আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

"আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় আঞ্চলিক ভূমিকা: শৃঙ্খলা নাকি বিশৃঙ্খলা"-শীর্ষক সম্মেলনটি আজ (রোববার) সকালে শুরু হয়েছে, চলবে আগামীকাল (সোমবার) পর্যন্ত। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির উপস্থিতিতে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। পেজেশকিয়ান এবং আরাকচির অনুষ্ঠানস্থলে আগমনের পর ইরানের জাতীয় সঙ্গীত এবং কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি'র সভাপতিত্বে এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।

এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন: জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল, উত্তর আমেরিকার দেশ, ইউরোপ, ইংল্যান্ড, জার্মানির বিদেশী প্রতিনিধিদল, পূর্ব ইউরোপ, তুরস্ক, আর্মেনিয়া, ভারত, জাপান, চীন, রাশিয়া, সৌদি আরব, ইরাক এবং পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর কর্মকর্তারা।

বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত থিংক ট্যাংক "আগোয়াশ" ইনস্টিটিউটও এই ফোরামে অংশ নিচ্ছে। এই সংস্থা আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে গবেষণার জন্য পরিচিত।

তেহরান ডায়ালগ ফোরামের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব কী?

আলোচ্য বিষয়

ফিলিস্তিনের সর্বশেষ পরিস্থিতি, প্রতিরোধ আন্দোলন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসন, পশ্চিম এশিয়ায় নতুন বিশ্বব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বিকল্প কাঠামো

উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণকারী

আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি, ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট নেচিরভান বারজানি, আর্মেনিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি আরমেন গ্রিগোরিয়ান এবং তাজিকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন মেহরউদ্দিন।

সম্মেলনের উদ্দেশ্য

তেহরান ডায়ালগ ফোরাম একটি কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যার মূল লক্ষ্য বিভিন্ন দেশ ও সভ্যতার মধ্যে সংলাপকে শক্তিশালী করা, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বে। এটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে দেশগুলো আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা বাড়াতে এবং উত্তেজনা কমাতে আলোচনা করে।

ইরান এই সম্মেলনের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক অবস্থান তুলে ধরে এবং বৈশ্বিক বিষয়ে তার পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকারগুলো উপস্থাপন করে। এই ফোরামের একটি মূল বিষয় হল- 'চরমপন্থা, নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যকে শক্তিশালী করা'।

আলোচনার কেন্দ্রীয় বিষয়

পশ্চিম এশিয়ার পরিবর্তন, ফিলিস্তিন ও ইয়েমেন সংকট এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক।

এই সম্মেলন ইরানকে আন্তর্জাতিক সংলাপ ও শান্তির সমর্থক হিসেবে তার ভাবমূর্তি শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং পাশ্চাত্যের নেতিবাচক প্রচারণাকে মোকাবিলা করে।

কূটনৈতিক গুরুত্ব

তেহরান ডায়ালগ ফোরাম ইরানের বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মুসলিম বিশ্বসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের একটি কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম। এছাড়াও, এটি ইরানের নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা এবং বিভেদনীতি মোকাবিলার প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করে।

ইরানের প্রভাব

এই সম্মেলনের আয়োজন এবং ব্যাপক আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ইরানের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাবেরই ইঙ্গিত দেয়। এটি প্রমাণ করে যে, পশ্চিমের মিথ্যা প্রচারণা ব্যর্থ হয়েছে এবং ইরান বিশ্বে একটি সম্মানিত ও প্রভাবশালী দেশ হিসেবে স্বীকৃত।

এই সম্মেলন ইরানকে আঞ্চলিক কূটনৈতিক সেতু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে ইরানের সফল পররাষ্ট্রনীতিকে নিশ্চিত করে।#

Your Comment

You are replying to: .
captcha