আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): কারবালার ঘটনা কেবল একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধ নয়; এটি মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের, অপমানের বিরুদ্ধে সম্মানের এবং আত্মসমর্পণের বিরুদ্ধে শাহাদাতের চিরন্তন সংগ্রামের প্রতীকও।
কারবালায় রাজনীতি ও শাহাদাতের মহাকাব্য।
হুসেইনী মাকহাবে শাহাদাত জাতির জাগরণের জন্য একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার।
কারবালার ঘটনা কেবল একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধ নয়; এটি মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের, অপমানের বিরুদ্ধে সম্মানের এবং আত্মসমর্পণের বিরুদ্ধে শাহাদাতের চিরন্তন সংগ্রামের প্রতীকও।
ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, ইমাম হুসাইন (আ.) কেবল মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র ইসলামকেই পুনরুজ্জীবিত করেননি, বরং ঈমান এবং শাহাদাতের সাধনার উপর ভিত্তি করে রাজনীতিতে মানবতাকে একটি মহান শিক্ষাও দিয়েছিলেন।
ইমাম হুসাইন (আ.) ইয়াজিদ এবং দুর্নীতিগ্রস্ত উমাইয়া শাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছিলেন এবং বলেছিলেন: "আমরা কখনও অপমানের কাছে নতি স্বীকার করব না, এমনকি যদি তারা আমাদের জীবনও কেড়ে নেয়।"
কারবালার বিদ্রোহ কেবল শিয়া বা মুসলমানদের জন্য নয়, বরং এটি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি বিশ্বব্যাপী মডেল।
ল্যাটিন আমেরিকার মুক্তি আন্দোলন থেকে শুরু করে এশিয়া ও আফ্রিকার উপনিবেশ বিরোধী সংগ্রাম পর্যন্ত, অনেক আন্দোলনই আশুরার অনুপ্রেরণা পেয়েছে।
আজ, যখনই কোন জাতি অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, তখনই তাদের মধ্যে হুসাইনের চেতনা সজীব হয়ে ওঠে। লেবানন, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে ইসলামী প্রতিরোধ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শুরু করা পথ অব্যাহত রেখেছে।
ইমাম হুসাইন (আ.) কারবালার পথে হোরের সেনাবাহিনীকে সম্বোধন করে বলেন
«إذا لم یکن لکم دین و کنتم لا تخافون المعاد، فکونوا أحراراً فی دنیاکم»
(যদি তোমাদের কোন ধর্ম না থাকে এবং বিচার দিবসকে ভয় না পাও, তাহলে অন্ততপক্ষে তোমরা পৃথিবীতে স্বাধীন থাকো) অর্থাৎ, কখনও অপমানের কাছে নতি স্বীকার করো না এমনকি যদি এর জন্য জীবনও ব্যয় করতে হয়।
এই স্লোগানটি আজ মুসলিম এবং বিশ্বের নিপীড়িতদের জন্যও প্রযোজ্য:
- বিশ্বব্যাপী উৎপীড়কদের কাছে মাথা নত করো না।
- আধিপত্যের সংস্কৃতি প্রতিরোধ করো।
- নির্ভরশীল রাজনীতিবিদদের উন্মোচন করো।
কারবালার ঘটনা কেবল একটি ট্র্যাজেডি নয়; এটি একটি সামাজিক-রাজনৈতিক মহাকাব্য যা মানবতাকে শেখায় কিভাবে মর্যাদা বজায় রাখতে হয় এবং সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে ইতিহাস মানে সেই একই চেতনা যা ইমাম হুসাইন (আ.) বিশ্বকে শিখিয়েছিলেন:
«অপমান সহকারে জীবনযাপনের চেয়ে মর্যাদা সহকারে মৃত্যু উত্তম»।
আজ, অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রতিটি জাতিই এই শিক্ষার উত্তরাধিকারী।
কারবালা কেবল একটি ইতিহাস নয়; এটি একটি পথ, এটি একটি স্থায়ী বিপ্লব।
Your Comment