২ আগস্ট ২০২৫ - ০০:১৬
ইরান এখনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা রাখে।

সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ির ফতোয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই।

আহলে বাইত (আ.) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আবনা): ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান পরমাণু আলোচক আব্বাস আরাকচি বলেছেন, তার দেশ এখনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা রাখে। তবে বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ি (হাফাযাল্লাহ) ফতোয়ার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই।


সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়া অনুযায়ী, গণবিধ্বংসী অস্ত্র ইসলামবিরোধী এবং তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আরাকচি বলেন, আলোচনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলার ব্যাখ্যা দিতে হবে।

সম্প্রতি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাকচি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সাম্প্রতিক যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ ইরানের কূটনৈতিক অবস্থানকে কঠিন করে তুলেছে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনায় ফেরার আগে ইরান এখন কঠিন কিছু শর্ত দিচ্ছে। 

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যাখ্যা করতে হবে, কেন তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনার মধ্যেই হামলা চালালো। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে এমন হামলা না হওয়ার নিশ্চয়তাও দিতে হবে। ক্ষয়ক্ষতির জন্য তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার পথ এখন সংকীর্ণ, কিন্তু একেবারে বন্ধ নয়। আমি আমার নেতৃত্বকে বোঝানোর চেষ্টা করছি- যদি আমরা আলোচনা করি, তবে অন্য পক্ষও একটি বাস্তবসম্মত, পারস্পরিক লাভজনক সমাধানে আগ্রহী।

আরাকচি জানান, যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বার্তা বিনিময় করেছেন এবং আলোচনার জন্য ‘উইন-উইন সমাধান’-এর প্রস্তাব দিয়েছেন।

এছাড়া তিনি নিশ্চিত করেন, ‘ইসফাহানের কাছে একটি নতুন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের প্রস্তুতি চলছিল, সেটি যুদ্ধের সময় হামলার শিকার হয়। যদিও সেটি তখনও চালু হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’ নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে আরাকচি বলেন, ‘এই শর্তে কোনো আলোচনা হতে পারে না। আমরা আলোচনায় বসতে পারি, যুক্তি তুলে ধরতে পারি। কিন্তু শূন্য সমৃদ্ধকরণের দাবি মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

তিনি ইউরোপীয় পক্ষগুলোর (বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি) প্রতি তীব্র সমালোচনা করে বলেন, যদি তারা ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করে (যার মাধ্যমে আগের জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় কার্যকর হয়) তাহলে ইরান তাদের সঙ্গে সব ধরনের আলোচনা বন্ধ করে দেবে।

আরাকচি বলেন, ‘তারা যদি স্ন্যাপব্যাক চালু করে, তবে সেটাই হবে তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনার পথের ইতি।’

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মন্তব্যগুলো ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনার ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। বিশেষ করে, চলমান যুদ্ধপরিস্থিতি ও কূটনৈতিক অবিশ্বাস দুই পক্ষের মধ্যকার সমঝোতার পথকে অনেকটাই কঠিন করে তুলেছে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha