২৭ আগস্ট ২০২৫ - ০০:১৬
ঈমান ও সহানুভূতি: মানবিক সমাজ গঠনের মূল ভিত্তি

ইসলামের দৃষ্টিতে সহানুভূতি কেবল একটি মানবিক গুণ নয়, বরং ঈমান থেকে উৎসারিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): সহানুভূতি মানুষের অন্তর্নিহিত মূল্যবান গুণ, যা তাকে অন্যের অনুভূতির সাথে যুক্ত করে। তবে এ সহানুভূতি কেবল তখনই সত্যিকার অর্থে প্রকাশ পায়, যখন ঈমান অহংকারের শৃঙ্খল ভেঙে হৃদয়ে বিনয় ও দয়া প্রতিষ্ঠা করে।



ইসলামের শিক্ষায় সহানুভূতি সমাজের ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

পবিত্র কুরআনে সহানুভূতির উচ্চ মূল্যায়ন করা হয়েছে:

وَیُؤْثِرُونَ عَلَی أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ کَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ

“তারা নিজেদের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও অপরকে অগ্রাধিকার দেয়।” [সুরা হাশর: ৯]

এই আয়াত প্রমাণ করে যে প্রকৃত ঈমান মানুষের হৃদয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের গুণ জাগ্রত করে। সহানুভূতি শুধু আবেগ নয়, বরং কর্মে প্রকাশিত একটি ঈমানী দায়িত্ব।

রাসূলুল্লাহ (সা.) সহানুভূতির  উদাহরণ দিয়ে বলেন,

مثلُ مؤمنینَ فی تَوادّهم وتَراحُمهم وتَعاطُفهم مثلُ الجسدِ، إذا اشتکی منه عضوٌ، تَداعی له سائرُ الجسدِ بالسَّهَرِ والحُمّی. 

মুমিনরা তাদের পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়া ও সহানুভূতিতে একটি দেহের মতো। যখন দেহের একটি অঙ্গ ব্যথিত হয়, পুরো দেহ অনিদ্রা ও জ্বরে ভোগে।

 [মিজানুল হিকমাহ, পৃষ্ঠা- ২৭৫৩]

 ইসলামী সমাজে সহানুভূতি কেবল সামাজিক শিক্ষা নয়, বরং ঈমানেরই প্রতিফলন। মুমিনের হৃদয়ে যখন দয়া জন্ম নেয়, তখন সে অন্যের কষ্টে ব্যথিত হয় এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দ্বিধা করে না।

সহানুভূতির সর্বোচ্চ নিদর্শন আহলে বাইত (আ.)-এর জীবনে উল্লেখ্য।

ইমাম আলী (আ.) ও হযরত ফাতিমা (সা.আ.) মানত আদায় করতে তিন দিন রোজা রাখের এবং তিন দিনই তাঁদের ইফতারের খাবার একজন অভাবগ্রস্ত, ইয়াতিম ও বন্দীর জন্য দান করেছিলেন। তাঁরা নিজেরা শুধু পানি পান করে রাত কাটান।

এ ঘটনা সম্পর্কে  কোরআনে বলা হয়েছে:

وَ یُطۡعِمُوۡنَ الطَّعَامَ عَلٰی حُبِّهٖ مِسۡكِیۡنًا وَّ یَتِیۡمًا وَّ اَسِیۡرًا. اِنَّمَا نُطۡعِمُكُمۡ لِوَجۡهِ اللّٰهِ لَا نُرِیۡدُ مِنۡكُمۡ جَزَآءً وَّ لَا شُكُوۡرًا.

“তাঁরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের খাদ্য  মিসকিন, ইয়াতিম ও বন্দীকে দান করেন ও বলেন: আমরা শুধুমাত্র  আল্লাহর জন্যই দান করেছি এর পরিবর্তে কোনো প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা চাই না।” ]সুরা দাহর: ৮-৯]

সহানুভূতি শুধু বার্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আহলে বাইত (আ.)-এর জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশও ছিল।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha