২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০৭:৫৬
ইতালি, ফিলিস্তিনি সমর্থনে ডাকা ধর্মঘট ও বিক্ষোভে উত্তাল

গাজায় ইসরাইলের আক্রমণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলো ইতালির হাজার হাজার মানুষ।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): দেশব্যাপী বিক্ষোভের জেরে স্কুল বন্ধ, বন্দর ও রাস্তাঘাটে যান চলাচল ব্যাহত।



ট্রেন পরিষেবাও বিপর্যস্ত। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল ও কানাডার পর ফ্রান্সসহ আরও কয়েকটি দেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তুতি নিলেও এই উদ্যোগ থেকে ইতালি এখন পর্যন্ত নিজেকে দূরে রেখেছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি আগে বলেছিলেন যে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে তাকে স্বীকৃতি দেয়া ‘পাল্টা ফল’ দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘যদি কাগজে-কলমে এমন কিছুকে স্বীকৃতি দেয়া হয় যার অস্তিত্বই নেই, তবে সমস্যাটির সমাধান না হলেও মনে হতে পারে যে এর সমাধান হয়ে গেছে।’


সোমবার ইতালির ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি জানাতে দেশজুড়ে প্রায় ৮০টি শহরে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বন্দরকর্মী। মিলান ও রোমের প্রধান রেল স্টেশনগুলোর কাছে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

মিলান থেকে পালেমো পর্যন্ত, সারা দেশে অন্তত ৭৫টি পৌরসভায় ইতালিয়রা রাস্তায় নেমে এসেছে। জেনোয়া এবং লিভোর্নোতে, ডক কর্মীরা বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে এই উদ্বেগের জন্য যে, ইতালি ইসরাইলে অস্ত্র হস্তান্তরের জন্য একটি স্টেজিং পোস্ট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

তুরিন ও বোলোনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম অবরোধ করেন। রোমের টারমিনি স্টেশনেই প্রায় ২০ হাজার বিক্ষোভকারী সমবেত হন। ১৭ বছর বয়সী মাইকেলেঞ্জেলো এজেন্স ফ্রান্স-প্রেসকে (এএফপি) বলেছেন যে, তিনি  নিঃশেষ হয়ে যাওয়া জনগোষ্ঠীকে  সমর্থন করতে এসেছেন।


মিলানের কেন্দ্রীয় রেলস্টেশনের কাছে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা মার্কিন পতাকা পোড়ালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কালো পোশাকধারী একটি দল পুলিশের দিকে পাথর, ধোঁয়ার বোমা ও লোহার রড নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। বোলোনিয়ায় প্রধান রিং রোড অবরোধ করলে পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। 


মিলানের মেয়র জিউসেপ্পে সালা বলেছেন, এই ভাঙচুর অপরাধ এবং এর সাথে গাজা ইস্যুর যোগসূত্র নেই। প্রধানমন্ত্রী মেলোনি বলেন, ‘এই সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে সংহতির কোনো সম্পর্ক নেই এবং এটি গাজার মানুষের জীবনে কিছু পরিবর্তন করবে না, বরং ইতালির নাগরিকদের জন্য বাস্তব ক্ষতি ডেকে আনবে।’


বিরোধীরা অভিযোগ করছে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি সংসদে গিয়ে ইসরাইল ও গাজা বিষয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার করেননি। ইতালির বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা এলি শ্লাইন অভিযোগ করেন, রবিবার যখন যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী মেলোনি জাতীয় টেলিভিশনে তার প্রিয় খাবারের সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। তিনি মিলানের ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে উলে­খ করেছেন।


এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, ‘জর্দান নদীর পশ্চিমে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না।’
প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগও বলেছেন, এ ধরনের স্বীকৃতি অন্ধকার শক্তিকে উৎসাহিত করবে। 

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha