আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): দখলদার ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা, অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞায় গাজা আরও ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশ বন্ধ থাকায় অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত উত্তর গাজায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এ মাসের শুরুতে ইসরায়েল জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ সরবরাহের একমাত্র করিডোর জিকিম ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে উত্তর গাজার জরুরি খাদ্য সরবরাহ, কমিউনিটি কিচেন ও স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, জিকিম বন্ধ হওয়ার পর তারা উত্তর গাজায় কোনো খাদ্য সরবরাহ করতে পারেনি।
জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) মুখপাত্র রিকার্ডো পাইরেস সতর্ক করে বলেছেন, জিকিম বন্ধ হওয়ায় উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ আরও মারাত্মক হয়ে উঠছে। ফিলিস্তিনি এনজিও নেটওয়ার্কের প্রধান আমজাদ আল-শাওয়ার জানিয়েছেন, আগে প্রতিদিন উত্তর গাজায় প্রায় এক লাখ নয় হাজার মানুষের জন্য খাবার তৈরি হতো, এখন তা কমে ৫০ হাজারে নেমে এসেছে। বহু রান্নাঘর বন্ধ হয়ে গেছে।
মানবিক সংকটে সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গাজা সিটির সাবরা এলাকার বাসিন্দা উম জাকি, পাঁচ সন্তানের জননী, বলেন—খাবারের দাম হু-হু করে বাড়ছে এবং অনেক জিনিসপত্র একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না।
খাদ্য বিক্রেতারা দক্ষিণে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। অন্যদিকে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা ইসমাইল জায়েদা জানান, তিনি টিনজাত খাবার দিয়ে কোনোমতে দিন কাটাচ্ছেন, কিন্তু সবজির কোনো খোঁজ নেই। গাজা সিটি পৌরসভা জানিয়েছে, তারা এখন ভয়াবহ পানি সংকটে রয়েছে, দৈনিক চাহিদার মাত্র ২৫ শতাংশ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে।
অপুষ্টি ও রোগে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, এ মাসে গাজা সিটির চারটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, কয়েকটি অপুষ্টি চিকিৎসা কেন্দ্রও কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। দক্ষিণ গাজার হাসপাতালগুলোও নতুন রোগী নেওয়ার জায়গা পাচ্ছে না।
Your Comment