আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): শনিবার (১১ অক্টোবর) দেশটির কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল যে ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে, সেই তালিকায় বারঘুতির নাম নেই। অথচ হামাস দীর্ঘদিন ধরেই বারঘুতির মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে।
হামাসের শীর্ষ আলোচক মুসা আবু মারজুক আল জাজিরাকে জানান, তারা এখনো বারঘুতির মুক্তির জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েল বারঘুতিকে ‘সন্ত্রাসী নেতা’ হিসেবে বিবেচনা করে। ২০০৪ সালে পাঁচজনকে হত্যার দায়ে তাকে একাধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের প্রধান উদ্বেগ বারঘুতির রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে। পশ্চিম তীরের ফাতাহ নেতা বারঘুতি একদিকে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে কথা বলেছেন, অন্যদিকে দখলবিরোধী সশস্ত্র প্রতিরোধেও সমর্থন দিয়েছেন। ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি এক অনন্য ঐক্যের প্রতীক; অনেকেই তাকে নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনা করেন।
মারওয়ান বারঘুতি কে?
৬৬ বছর বয়সী বারঘুতি পশ্চিম তীরের কুবার গ্রামের বাসিন্দা। বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে তার উত্থান। প্রথম ও দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় তিনি সক্রিয় ছিলেন এবং ১৯৯০-এর দশকের শান্তি প্রক্রিয়ার সময় পশ্চিম তীরে ফিরে আসেন।
দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় ফাতাহর পশ্চিম তীর শাখার প্রধান হিসেবে ইসরায়েল তাকে আল-আকসা শহিদ ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ তোলে, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেন। আদালতের কর্তৃত্ব মানতে অস্বীকার করায় তাকে একাধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বন্দি অবস্থায়ও বারঘুতি ফিলিস্তিনি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। ২০২১ সালে তিনি সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী তালিকা জমা দেন, যা পরে স্থগিত হয়। তিনি বন্দিদের অধিকার আদায়ে ৪০ দিনের অনশন আন্দোলনও পরিচালনা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, বারঘুতি ফিলিস্তিনের সব গোষ্ঠীর মধ্যেই জনপ্রিয়। তার মুক্তি ফিলিস্তিনি নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে পারে—যা ইসরায়েলের ডানপন্থি সরকার এবং এমনকি মাহমুদ আব্বাসের জন্যও রাজনৈতিকভাবে অস্বস্তিকর হবে।
সবশেষ গত আগস্ট মাসে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বারঘুতির সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাতের ভিডিও প্রকাশ করেন এবং সতর্ক করে বলেন, ‘যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কাজ করবে, তাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।’
Your Comment