১৩ অক্টোবর ২০২৫ - ১৪:৩৭
২০ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস।

দুই বছর ধরে চলা ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে গাজায় বন্দি থাকা সবশেষ ২০ ইসরাইলি জিম্মিকে সোমবার মুক্তি দিয়েছে হামাস।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরাইলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম জানায়, জিম্মিদের দুই ধাপে মুক্তি দেওয়া হয়— প্রথমে ৭ জন এবং পরে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে আরও ১৩ জনকে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করা হয়।


চুক্তি অনুযায়ী, হামাসের হাতে থাকা জীবিত সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং বিনিময়ে ইসরাইলও দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে। এই মুক্তি প্রক্রিয়া চলাকালেই ট্রাম্প সোমবার সকালে এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ইসরাইলে অবতরণ করেন।

বেন গুরিওন বিমানবন্দরে ট্রাম্পকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, রেড ক্রসের তত্ত্বাবধানে প্রথম সাতজন জিম্মিকে আমরা গ্রহণ করেছি এবং আরও কিছু জিম্মি হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।

এই খবরে তেল আবিবের হোস্টেজেস স্কয়ারে জড়ো হওয়া শত শত মানুষ আনন্দে ফেটে পড়ে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নোগা নামের এক নারী, যার আত্মীয় এখনো ফেরেননি। তিনি বলেন, আমি আবেগে ভরে গেছি, কিন্তু একইসঙ্গে কষ্ট পাচ্ছি— কারণ সবাই ফিরে আসছে না।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অভূতপূর্ব হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয় এবং ১,২০০-রও বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এর মধ্যে ৪৭ জন ছাড়া বাকি সবাই আগেই বিভিন্ন পর্যায়ে মুক্তি পেয়েছিলেন।

গাজার পক্ষে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি আনলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলটি এখন প্রায় পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত।

৩৮ বছর বয়সি ফাতিমা সালেম বলেন, আমি যখন গাজা সিটিতে আমার শেখ রাদওয়ান এলাকায় ফিরলাম, কিছুই আগের মতো লাগছিল না। চারপাশের ঘরবাড়ি, পরিচিত চিহ্ন—সবকিছু হারিয়ে গেছে। তবুও মনে হচ্ছিল আমি আমার ঘরে ফিরেছি, যদিও এখন সেটা ধ্বংসস্তূপ।

তিনি আরও বলেন, আমরা ভাঙা ঘরের পাশে একটি তাঁবু ফেলব, সেখানেই থাকব— যতদিন না পুনর্গঠন শুরু হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কায়া কালাস হামাসের মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের খবরকে ‘শান্তির পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ বলে আখ্যা দেন। তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন, এই সাফল্য ট্রাম্পের নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহল এখন নজর রাখছে ট্রাম্পের নেতৃত্বে শারম আল শেখে অনুষ্ঠিতব্য শান্তি সম্মেলনের দিকে, যেখানে স্থায়ী শান্তির রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha