আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রায় একমাস পরও গাজায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯ হাজার ১৬৯ জনে পৌঁছেছে।
ফিলিস্তিনিরা নাবলুসের দক্ষিণে জলপাই সংগ্রহ করতে গেলে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা লাঠিসোঁটা ও বড় পাথর নিয়ে ভুক্তভোগীদের ওপর চড়াও হয়। আহতদের মধ্যে রয়েছেন রয়টার্সের এক সাংবাদিক এবং এক নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ১০ জনের মতো সাংবাদিক সঙ্গে নিয়ে ৩০ জন গ্রামবাসী ও সমাজকর্মী জলপাই সংগ্রহে অংশ নিয়েছিলেন। তখন পাহাড়ের ওপরের চৌকি থেকে ইসরাইলিরা হামলা চালায়।
তারা রয়টার্সের আলোকচিত্রী রানিন সাওয়াফতাকে মারধর করে এবং তার ক্যামেরা ভেঙে দেয়। সঙ্গে থাকা রয়টার্সের নিরাপত্তা উপদেষ্টা গ্রান্ট বাউডেন তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকেও পেটানো হয়।
পশ্চিমতীরের ওই এলাকাটি আগে থেকেই সেটেলারদের সহিংসতার জন্য পরিচিত। ২০২৩ সালে গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সহিংসতা শুরুর পর থেকেই এমন হামলার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
হামলার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীরা প্রায়ই একসঙ্গে ফসল সংগ্রহে অংশ নেন, সহিংসতা নথিবদ্ধ করেন এবং সাংবাদিকদের ঘটনাস্থলে ডেকে আনেন।
ইসরাইলি মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এমন ঘটনাগুলো প্রায়ই তদন্ত হয় না এবং হামলাকারীরা খুব কম ক্ষেত্রেই শাস্তি পায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইসরাইলি মানবাধিকারকর্মী জোনাথন পোলাক বলেন, প্রায় ৫০ জন সেটেলার হামলা চালায়।
তারা সাওয়াফতাকে নির্মমভাবে পেটায়, সে মাটিতে পড়ে গেলে পাথর ছোড়ে এবং যারা সাহায্য করতে আসে তাদেরও আক্রমণ করে। সাওয়াফতা ও বাউডেন দুজনই হেলমেট ও প্রেস লেখা জ্যাকেট পরা অবস্থায় ছিলেন।
হামলার পর তাদের নাবলুসের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। হামলার বিষয়ে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা সংঘর্ষের খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে সেনা পাঠায়। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, সেখানে কোনো সেনাসদস্য উপস্থিত ছিলেন না। সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, আইডিএফ যে কোনো সহিংসতার নিন্দা জানায় এবং এলাকার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ চালিয়ে যাবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি হামলায় ২৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রবিবার ইসরাইলি হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের পরও নানা অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।
গাজার উত্তর সীমান্তে ইয়েলো লাইন অতিক্রম করার অভিযোগ তুলে হত্যা করেছে আরও কয়েকজনকে। স্থানীয়দের দাবি, যুদ্ধবিরতির পর নির্ধারিত এই ইয়েলো লাইন আসলে অদৃশ্য এক সীমা, যা কোথায় রয়েছে কেউ জানে না।
Your Comment