আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): প্রাথমিকভাবে বাহিনীতে ইসরায়েল ও বিভিন্ন দেশের সেনারা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই বাহিনী গাজায় একটি ‘সবুজ অঞ্চল’ গড়ে তুলবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট এই সবুজ অঞ্চলেই প্রথমে পুনর্গঠন কাজ শুরু হবে।
এতে গাজা দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার জন্য তৈরি করা মার্কিন সামরিক পরিকল্পনার নথি থেকে এসব তথ্য জানতে পেরেছে গার্ডিয়ান।
প্রাথমিকভাবে সবুজ অঞ্চলে আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করা এবং অঞ্চলটি আস্তে আস্তে প্রসারিত করার কথাও বলা হচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমানে ইসরায়েলি সেনাদের তৈরি তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ বরাবর অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে রাখবে ইসরায়েল।
তবে কাজটি যে সহজ হবে না, তা একজন মার্কিন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন। তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘এটি আপাতদৃষ্টিতে ভালো পরিকল্পনা হলেও তা উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন।’
গত মাসে ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা ঘোষিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। তবে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিষয়টি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে না। এখন দেখা যাচ্ছে, গাজার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে উপত্যকার ২০ লাখ জনঅধ্যুষিত ‘রেড জোন’ এখন বিশ্বের সবচেয়ে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
এদিকে মধ্যস্থতাকারীরা সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘যুদ্ধও নয়, শান্তিও নয়’ এমন একটি পরিস্থিতি গাজায় তৈরি হতে পারে। ফলে নিয়মিত ইসরায়েলি হামলা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে কোনো শাসন কর্তৃপক্ষ না থাকায় ফিলিস্তিনি নাগরিকরা অসহায় দিনতিপাত করবেন। বাড়িঘর কিংবা ভবনের সংস্কারও থেমে থাকতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য নেওয়া পরিকল্পনা মানুষ হত্যার ট্র্যাপে পরিণত হয়েছিল। নতুন এই সবুজ অঞ্চলের পরিকল্পনাও একই রকম ভয়াবহ হতে পারে।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পরের পর্যায়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের শর্তাবলি বিবেচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এ পরিকল্পনা গাজায় স্থিতিশীলতা আনার জন্য করা হয়েছে। পরে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এবং বেসামরিক শাসন ব্যবস্থায় রূপান্তরের দিকে এগিয়ে নেওয়া হবে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, গাজার ৮০ শতাংশ অবকাঠামো যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় সব স্কুল ও হাসপাতাল অন্তর্ভুক্ত। যুদ্ধবিরতির এক মাসের বেশি সময় পার হলেও ইসরায়েল এখনও ত্রাণ সরবরাহ আটকে দিচ্ছে। প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি জরুরি আশ্রয়ের জন্য অপেক্ষা করছে।
Your Comment