‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
সোমবার

২ অক্টোবর ২০২৩

২:৫৪:৩৩ AM
1397242

রাহবারের দরস:

ফিলিস্তিন দখল হয়ে যাওয়া, ইসলামী ঐক্যের প্রতি কতিপয় রাষ্ট্রের গুরুত্ব না দেয়ার আলামত

মহামান্য রাহবার বলেন: ইসলামী বিশ্ব যদি ঐক্যের ন্যূনতম পর্যায়েও নিজেদেরকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রাখত তাহলে ফিলিস্তিন দখল ও বর্তমানে গাজার এরূপ পরিস্থিতি হত না।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ১২ থেকে ১৭ই রবিউল আউয়ালকে ঐক্য সপ্তাহ নামকরণ করা হয়েছে, যাতে ইসলামী বিশ্বের মধ্যে ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব এবং জাতীয় ঐক্যের অনুস্মারক হয়। এ সম্পর্কে হজরত আয়াতুল্লাহিল উযমা খামেনেয়ীর বক্তব্য ছিল নিম্নরূপ:

 

ইসলামী ঐক্যের পর্যায়গুলো কি?

ঐক্যের কিছু পর্যায় রয়েছে; ইসলামী বিশ্বের ঐক্যের কিছু পর্যায় রয়েছে; এর সর্বনিম্ন পর্যায় হল মুসলিম সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতিসমূহ এবং মাজহাবসমূহ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত না হওয়া। পরস্পরের প্রতি আগ্রাসন না চালানো। একে অপরকে আঘাত না করা। এটিই প্রথম ধাপ। কিন্তু এর ঊর্ধ্বে যে বিষয়গুলি রয়েছে তা হল, অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে একে অপরের হাতে হাত রাখা, প্রকৃত ঐক্য বজায় রাখা এবং পরস্পরকে রক্ষা করা।

এটি হল এক ধাপ ঊর্ধ্বে; এরও ঊর্ধ্বে রয়েছে ইসলামী দেশসমূহ ও জাতিসমূহের মাঝে পারস্পারিক সহযোগিতা। ইসলামী রাষ্ট্রসমূহ জ্ঞান-বিজ্ঞান, সম্পদ, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক সামর্থ্যের দিক দিয়ে একরূপ নয়, বিধায় তারা একে অপরকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারে। যারা যে বিষয়ে উচ্চতর অবস্থানে থাকবে, তারা অন্যদেরকে সহযোগিতা করবে। এটিও ঐক্যের অন্যতম একটি পর্যায়।

এর উপরের স্তরটি হল, নব ইসলামী সভ্যতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হবে। এটিকেই ইসলামী প্রজাতন্ত্র তার চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে; ইসলামী সভ্যতায় পৌঁছানো, যা হবে সময়োপযোগী, নব ইসলামী সভ্যতা। এগুলিই হল ঐক্যের পর্যায়সমূহ। তাহলে এখন আপনারা লক্ষ্য করুন, ঐক্যের সর্বনিম্ন পর্যায়টি কি ছিল? এটিই ছিল যে, ইসলামী রাষ্ট্রসমূহ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না এবং অভিন্ন শত্রুর বিরুদ্ধে একে অপরের পাশে অবস্থান করবে; যদি বর্তমান সময়ে আমরা তা রক্ষা করে থাকতাম, তাহলে ইসলামী বিশ্বের এই সমস্ত বিপর্যয় থাকত না।

 

ফিলিস্তিন দখল হয়ে যাওয়া, ইসলামী ঐক্যের প্রতি কতিপয় রাষ্ট্রের গুরুত্ব না দেয়ার আলামত

যদি ফিলিস্তিনের বিষয়েই বলা হয় যে, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হচ্ছে ফিলিস্তিন ইস্যু, কেননা একটি জাতিকে তাদের নিজেদের বসতভিটা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, নিজেদের মাতৃভূমি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। যাদেরকে সেখানে আনা হয়েছে, থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাদেরকে শাসক করা হয়েছে এবং বাড়ির মালিকদেরকে চাপে রাখা হয়েছে; লক্ষ্য করুন এটিই গাজার অবস্থা ও ইহুদীবাদীদের অপরাধযজ্ঞ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি। যদি মুসলিম বিশ্ব ঐক্যের এই সর্বনিম্ন পর্যায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকত তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না। শত্রুরা এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের সাহস দেখাতো না।

আপনারা লক্ষ্য করুন মুসলিম বিশ্বে কি কি ঘটনা ঘটেছে, কোন রক্তাক্ত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে; ইয়েমেন ইস্যু, পশ্চিম ও উত্তর আফ্রিকা; একারণেই হয়েছে যে, ইসলাম আমাদের কাছে ঐক্যের যে ন্যূনতম দাবি রাখে, সেদিকে আমরা অমনোযোগী; যেখানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

এটিকে আমরা উজ্জ্বল চিন্তার অধিকারীদের নিকট উপস্থাপন করছি। আলহামদুলিল্লাহ মুসলিম বিশ্বে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যাদের দায়িত্ব এ বিষয়টিকে একাগ্রতার সাথে অনুসরণ করা। যুব-সমাজ, মুসলিম জাতিসমূহ প্রস্তুত কিন্তু এমন কিছু বিভাজনকারী হাত রয়েছে যাদেরকে রুখতে হবে। মুসলিম বিশ্বে আজ উত্তর আফ্রিকা থেকে পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার পর্যন্ত মুসলমানরা চাপের মুখে; মুসলিম বিশ্বের পূর্ব ও পশ্চিমে মুসলমানরা চাপে রয়েছে।#176A