‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শুক্রবার

৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

৬:৫৮:০৭ PM
1436401

ইরাকের আহদুল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব:

ইরানের মত নিরাপত্তা বিশ্বে কোথাও দেখিনি/ বর্ণন জিহাদ, বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিহাদ

বিপ্লবের পর ইরানের লক্ষণীয় আধ্যাত্মিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে ইরাকের আহদুল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অভ্যন্তরের সামরিক নিরাপত্তা ন্যায় বিশ্বের কোথাও এমন নিরাপত্তা প্রত্যক্ষ করিনি।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যেদ হাশিম আল-হাইদারি, ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার সন্ধ্যায়, গিলান প্রদেশের রাশত শহরের মুসাল্লায় অবস্থিত মাজার রক্ষা ও প্রতিরোধ অক্ষের যুদ্ধে শহীদদের স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে আয়োজিত ‘কুদসের পথ-গামী’ শীর্ষক মহা সমাবেশের প্রদত্ত ভাষণে, নেয়ামত সমূহকে মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহর নেয়ামতের বিপরীতে কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে; যার মধ্যে শুকরিয়া আদায়, আমল করা এবং নেয়ামতের বর্ণন করা অন্যতম।

তিনি ইসলামে রসুলুল্লাহ (সা.) ও আহলে বাইত (আ.)-এর নূরানি অস্তিত্বের পর ইসলামী শাসন ব্যবস্থা ও শাসককে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেয়ামত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন: গাদিরে খুম রাজনৈতিক ও শাসনব্যবস্থার নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক অভিভাবকত্বের গুরুত্ববহন করে; তাই গাদিরের দিনকে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সবচেয়ে বড় ঈদ হিসেবে গণ্য করা হয়।

ওয়ালী এ আমরের আনুগত্য এবং তাকে সহযোগিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইরাকের আহদুল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, জনগণের অসহযোগিতাই ছিল মূলতঃ ইমাম আলীর (আ.) অধিকারের সাথে অবিচারের প্রধান কারণ; কেননা তৎকালীন বেশিরভাগ মানুষ তাহাজ্জুদ আদায়কারী ও কুরআনের হাফেজ হও; আল্লাহর ওলীর সহযোগিতার জন্য মাঠে নামেনি এবং তাকে সহযোগিতা করেনি।

ইমাম খোমেনির শাসনব্যবস্থাকে ইমাম হুসাইনের (আ.) শাহাদাতের পর প্রথম কোন ইসলামী শাসনব্যবস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করে আল-হাইদারি বলেন, ২২শে বাহমান ১৩৫৭ সৌরবর্ষে এবং হাজার বছরেরও বেশি সময় পরে, প্রথম ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

কেন ইমাম খোমেনি (রহ.) নেতৃত্বে পৌঁছালেন এবং বেলায়েতে ফকীহ (ফকিহের নিরঙ্কুশ অভিভাবকত্ব) বইয়ের থিওরি থেকে বাস্তবে ক্ষমতায় পৌঁছেছে, এ প্রসঙ্গ উল্লেখপূর্বক করে তিনি বলেন, ইমামের আহবান এবং রাজপথে জনগণের উপস্থিতির কারণে এই শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মূলতঃ ইমাম খোমেনির (রহ.) সফলতার রহস্য হল ইরানের জনগণ।

ইসলামী বিপ্লবকে আজকের প্রতিরোধ অক্ষ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইরাকের প্রতিরোধ অক্ষের অন্যতম এই নেতা বলেন, আমি ইরান ও গিলানের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই; কেননা সুদীর্ঘ ইতিহাসে মুসলিম জনগণ ইসলাম ও আহলে বাইতের শাসনব্যবস্থা রক্ষায় ময়দানে অবস্থান করেনি; কিন্তু আপনারা যুগের ইমামের প্রতিনিধি এবং ইসলামী শাসনব্যবস্থা রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন।

তিনি সর্বোচ্চ নেতার ভাষ্য, ইমাম খোমেনি (রহ.) বর্ণন জিহাদের মাধ্যমে ইসলামী শাসনব্যবস্থা বিনির্মাণ করেন এবং পাহলাভি শাসনতন্ত্রকে পরাজিত করেন –এ কথার প্রতি ইঙ্গিত করে আরও বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিহাদ হল বর্ণন জিহাদ। যদিও অস্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে; কিন্তু বর্ণন জিহাদ ব্যতীত অস্ত্র ও রকেটের কোন ফায়দা নেই।

বর্ণন জিহাদ, বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিহাদ হিসেবে উল্লেখ আল-হাইদারি বলেন, সর্বোচ্চ নেতার ভাষ্য অনুযায়ী বর্ণন জিহাদ চূড়ান্ত ও জরুরী কর্তব্য। এটি বেলায়েতের আদেশ ও ফতওয়া এবং এর প্রতিপালন প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত মুসলমানের দায়িত্ব।

তিনি জেনারেল সোলাইমানীর ওয়ালী-এ ফকিহ ও ময়দান সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে একটি সোলাইমানী চিন্তাধারা প্রবর্তনের প্রতি ইশারা করে বলেন, তিনি ওয়ালী-এ আমরের আনুগত্যকারী, অভিভাবকের সৈনিক ও একনিষ্ঠতার অধিকারী ছিলেন এবং এ কারণেই তিনি হাজ কাসেম-এ পরিণত হয়েছেন।

বর্ণন জিহাদকে বর্তমান সময়ে সকলের দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করে ইরাকের আহদুল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, বর্তমানে আমাদের কাসেম সোলাইমানী ও বর্ণন জিহাদ এবং সোলাইমানী সংস্কৃতির প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বর্তমান সমাজের প্রয়োজন চিন্তাগত ও বিশ্বাসগত রকেট, যা আমাদেরই দায়িত্ব। অবশ্যই নিজেদেরকে জেনারেল কাসেম সোলাইমানীর পথে পরিচালিত করতে হবে।

আল-হাইদারি আফসোস করে বলেন, আমরা ওয়ালী-এ ফকিহকে বাদ দিয়ে সোলাইমানী চিন্তাধারার প্রতি দৃষ্টিপাত করছি। অথচ এর মূলেই রয়েছে বেলায়েতে ফকিহ। যদি ইমাম খোমেনি (রহ.) এবং ইমাম খামেনেয়ি না থাকতেন, তাহলে হাজ কাসেমও থাকতো না।

বর্ণন জিহাদ এবং বেলায়েতের প্রয়োজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত করে ইরাকের আহদুল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শাসনব্যবস্থা আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বে শীর্ষে অবস্থান করছে এবং ইরানের জনগণ দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে আধ্যাত্মিকতার মধ্যে বসবাস করছে।

তিনি বিপ্লবের প্রথম থেকে বেলায়াত ও শাহাদাতের প্রতি ইরানি যুবকদের ভালোবাসার কথা স্বীকার করে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পৃথিবী যেখানে ফেসাদ ও অপকর্মে পূর্ণ; সে অবস্থায় একদল প্রেমিকেরা গিলান থেকে নাবল ও আয-যাহরায় গিয়েছে, এটিই হল আধ্যাত্মিকতা।

বিপ্লবের পর ইরানের লক্ষণীয় আধ্যাত্মিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে আল-হাইদারি বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অভ্যন্তরের সামরিক নিরাপত্তার ন্যায় বিশ্বে কোথাও এমন নিরাপত্তা প্রত্যক্ষ করিনি।

পাশ্চাত্য ও বিশ্বের এলোমেলো অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি, শুধুমাত্র ইরানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ নয়; শত্রুরা ক্রমাগত প্রচার করছে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি শুধুমাত্র ইরানেই বিদ্যমান।

ইরাকের আহদুল্লাহ ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব পরিশেষে বলেন, আমার বিশ্বাস, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রকাশ্য সমালোচনা করা একটি সমস্যা এবং এর জবাব অবশ্যই প্রকাশ্যে দিতে হবে।#176A