গত শনিবার রাতে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা একটি মহাসড়কে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা ১০ মাসে গড়াল। গত নভেম্বরে এক সপ্তাহের একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি ছাড়া এই দীর্ঘ সময় জুড়ে ইসরায়েলি বাহিনী হামলায় আর কোনো বিরতি দেয়নি।
জিম্মি মুক্তি ও গাজায় যুদ্ধবিরতি দিতে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে থাকার পরও নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি জনপদটিতে হামলা চালিয়েই যাচ্ছেন।
নতুন যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারীরা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বেশ কয়েকবার সমঝোতা করানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। সম্প্রতি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু করেছে মধ্যস্থতাকারীরা। হামাসের হাতে এখনো ১১৬ জন জিম্মি রয়েছে।
তাদের মধ্যে ৪২ জন মারা গেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে।
গাজায় ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলা থামাতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিসরের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তার বরাতে দেশটির আল কাহেরা সংবাদমাধ্যম গত শনিবার গভীর রাতে জানায়, কায়রো যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তিসংক্রান্ত অসামান্য দিক আলোচনা করতে ইসরায়েলি ও মার্কিন প্রতিনিধিদের আতিথেয়তা করছে মিসর। চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করার পাশাপাশি মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। তবে এ বিষয়ে আর কোনো বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি সংবাদমাধ্যমটি।
এদিকে ইসরায়েলও যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, আগামী সপ্তাহে তারা কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করতে দোহায় ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল পাঠাবে। যদিও নেতানিয়াহুর মুখপাত্র গত শুক্রবার বলেছেন, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে হামাসের সঙ্গে তাঁদের মতের এখনো ব্যবধান রয়েছে। গত মে মাসের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে হামাসের হাত থেকে জিম্মি মুক্তির একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বাইডেনের এই প্রস্তাব নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে আলোচনা থমকে যায়। তবে গত বৃহস্পতিবার এক মার্কিন কর্মকর্তা হামাসের একটি নতুন প্রস্তাবের কথা জানান। এই প্রস্তাব আলোচনা প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে এবং চুক্তিতে পৌঁছানো ভিত্তি তৈরি করতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন মার্কিন কর্মকর্তা।
ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে গাজায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে । ধ্বংস, মৃত্যু আর অনাহারের প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে জনপদটি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল জানায়, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ১৫৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮৭ হাজার ৮২৮ জন। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। জনপদটিতে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, গাজার অন্তত পাঁচ লাখ মানুষকে ‘বিপর্যয়কর ক্ষুধা’ সহ্য করতে হচ্ছে। গাজার বেশির ভাগ হাসপাতালগুলো অকার্যকর হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও গাজায় হামলা চালিয়েই যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার একটি স্কুলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থীশিবিরের ওই স্কুল ভবনটিতে বহু বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল।
342/