২৮ মে ২০২৩ - ১০:৪৭
রাশিয়াকে ড্রোন দেয়া বন্ধ করুন: ইরানের প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের আহ্বান

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আবারো ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ না করার জন্য ইরানের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একটি নতুন প্রচারমূলক শোতে রাশিয়ার পাশে না থাকার জন্য ইরানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন ইতিহাসের অন্ধকারে ফিরে যাওয়া উচিত হবেনা। তার ভাষায় কেন আপনারা রাশিয়ার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে হাত মিলিয়েছেন এমন প্রশ্ন তুলে তিনি রাশিয়ার ভয়ানক কর্মকাণ্ডের সহযোগী না হতে অনুরোধ করেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তার এ দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং পাশ্চাত্যের কাছ থেকে অস্ত্র সহায়তা পাওয়ার জন্যই তিনি ইরানের ব্যাপারে এ মন্তব্য করেছেন। বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যের মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করে এটাকে ভিত্তিহীন অভিহিত করেন কানয়ানি। তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মিথ্যা দাবির পুনরাবৃত্তি ইরানের সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে প্রচারণা যুদ্ধের অংশ এবং তাদের মূল টার্গেট পাশ্চাত্যের সমর্থন ও অস্ত্র সহায়তা পাওয়া।

ইউক্রেন এবং আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের আরো কয়েকটি দেশ সম্প্রতি দাবি করেছে, ইরান তাদের তৈরি শাহেদ ১৩১ এবং শাহেদ ১৩৬ মডেলের ড্রোন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে সরবরাহ করেছে। তবে তেহরান বারবারই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের অবস্থান নিরপেক্ষ এবং তারা যেকোনো যুদ্ধের বিরোধী এবং ইউক্রেনে শান্তি ও যুদ্ধবিরতি চায়।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ইরান রাজনৈতিক উপায়ে সংকট সমাধান এবং বিরোধ মীমাংসার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ লক্ষ্যে ইরান কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান গত বছর আগস্টের শেষের দিকে মস্কো সফরে গিয়ে দেশটির কর্মকর্তাদের সাথে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করেন এবং তেহরানের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন ইউক্রেন যুদ্ধে মধ্যস্থতা করার জন্য ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়িসির প্রতি আহ্বান জানানোর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কো সফরে যান। চলতি বছর ২৫ এপ্রিল ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেহরানে জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব মার্টিন গ্রিফিতসের সাথে বৈঠকে বলেছেন, ইরান কোনো পক্ষকেই অস্ত্র সাহায্য দিচ্ছে না এবং  যুদ্ধকে সমস্যা সমাধানের উপায় বলে মনে করে না। একই সাথে তিনি ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতিও সমর্থন জানান।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আরোপ করার পর এ প্রশ্নও তোলা যায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পাশ্চাত্য কেন এখনো ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে? কেন ইউরোপ আমেরিকার এ অন্যায় কাজের  প্রতিবাদ করছে না? কেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আমেরিকার জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলছেন না যে আপনারা অতীতের অন্ধকারে ফিরে যাবেন না এবং ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সহযোগী হবেন না?

কিন্তু, বাস্তবতা হচ্ছে ইউক্রেন সবসময়ই আমেরিকার ইরান বিরোধী নীতির প্রতি সমর্থন দিয়ে এসেছে।#   

342/