২১ মে ২০২৪ - ০৩:২০
আফগানিস্তানে জাফরী মাজহাবকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে তালেবানের কোন ক্ষতি হবেনা

আফগানিস্তানের এই শিয়া আলেম বলেন, আফগানিস্তানে জাফরী মাজহাবকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হলে, তালেবানের জন্য তা ক্ষতির কারণ হবে না; বরং এর থেকে তালেবান সরকারই লাভবান হবে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): তালেবান সরকারের নিকট আফগানিস্তানের শিয়াদের দাবির প্রতি ইশারা করে আফগানিস্তানের কাবুল শহরের পশ্চিমের শিয়া আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন ইয়ার মুহাম্মাদ রাহমাতী জোর দিয়ে বলেন, তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানে জাফরী মাজহাব আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেলে, আফগানিস্তানের বিষয়ে শত্রুদের হস্তক্ষেপ ও বিভেদ সৃষ্টিতে হ্রাস ঘটবে।

আবনার প্রতিবেদকের সাথে সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আফগানিস্তানে জাফরী মাজহাব আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেশের অভ্যন্তরীন স্থিতিশীলতা, শান্তি ও নিরাপত্তার কারণ হবে। এমতাবস্থায় দেশের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ জনগণ তথা শিয়ারা নিজেদেরকে তালেবান সরকারকে পর না ভেবে আপন মনে করবে। আফগানিস্তানের শিয়া এবং তালেবান সরকারের সম্পর্ক জোরদার হলে, তা শত্রুর বিভেদ ছড়ানোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু তালেবান সরকার কর্তৃক আফগানিস্তানের শিয়াদেরকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া না হলে, কিছু লোক আফগানিস্তানে দাঙ্গা বাধাতে ও নিরাপত্তা নষ্ট করতে বিভ্রান্ত হতে পারে।

আফগানিস্তানের এই শিয়া আলেম বলেন, তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা আফগানিস্তানের শিয়া সম্প্রদায়ের বুজুর্গদের সাথে বৈঠকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে ২০ বছর যুদ্ধের পর ইসলামী আমিরাত সরকার ক্ষমতায় এসেছে এবং গত দুই দশকের ধ্বংসবাশেষ ঠিক করতে সময়ের প্রয়োজন।

 

জাফরী মাজহাবকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে তালেবান সরকারই লাভবান হবে

তালেবান সরকারের নিকট শিয়াদের দাবির প্রতি ইঙ্গিত করে রাহমাতী বলেন, এই দাবিগুলো যাচাইয়ের জন্য আফগানিস্তানে ‘শিয়াদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অধিকার’- নামে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে যাতে যত দ্রুত সম্ভব দাবিগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায়। আফগানিস্তানে জাফরী মাজহাবকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হলে, তালেবানের জন্য তা ক্ষতিকর হবে না; বরং এতে তালেবান সরকারই লাভবান হবে।

আফগান এই শিয়া আলেমের বিশ্বাস, এই দেশে তালেবান সরকারকে শক্তিশালী করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হচ্ছে, নাগরিক অধিকারের আদায়, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, আফগানিস্তানে জাফরী মাজহাবকে স্বীকৃতি দেয়া, শিয়াদের বিরুদ্ধে বৈষম্য না থাকা এবং তালেবান সরকারে অধীনে তাদের নিয়োগ প্রদান ইত্যাদি।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আফগানিস্তানে শিয়া, সুন্নি ও হানাফি মাজহাবসহ বিভিন্ন জাতি ও মাজহাবের অনুসারীরা অবস্থান করছে এবং আফগান জাতিগুলো সব সময় একে অপরের পাশে ভ্রাতৃত্বের সাথে বসবাস করে আসছে এবং আগামীতেও করবে। আফগানিস্তানের বুদ্ধিজীবীদের দায়িত্ব এদেশের জনগণকে আগের চেয়ে আরও বেশি ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের প্রতি আহবান করা।

রাহমাতী এই কথোপকথনের শেষাংশে গাজায় চলমান সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক ইসলামী রাষ্ট্র গাজা সঙ্কটে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালায়নি। তাদের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা না চালানোর পিছনে রয়েছে ইসলামী দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য না থাকা। এই অবস্থায়ও ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান প্রথম কাতারে দাড়িয়ে গাজাকে সহযোগিতা করেছে এবং এই কঠিন পরিস্থিতিতে অসহায় মজলুম ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটি এমন সময়ে যখন গাজা বিপর্যয়ে অনেক ইসলামী দেশ নীরবতা পালন করছে অথবা দখলদার জায়নবাদী সরকারকে সহযোগিতা করছে এবং বিমানের জ্বালানী ও সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।#176A