আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কয়েক দিন ধরে কোনো খাবার খেতে পারছে না। সংস্থার জরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া বিভাগের পরিচালক রস স্মিথ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজায় ক্ষুধা এমন এক ভয়াবহ ও অবিশ্বাস্য পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এক-তৃতীয়াংশ মানুষ টানা কয়েক দিন ধরে কিছুই খেতে পারেনি।’
ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী, গাজার এক-চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতিতে রয়েছে। এ ছাড়া, এক লাখ নারী ও শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে।
গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে খাদ্য, ওষুধ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের পরিকল্পিত এই অভুক্ত রাখার নীতির কারণে ৮৬ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৬ জনই শিশু।
এদিকে, গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৯ হাজার ২১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ১১৩ জনের মরদেহ হাসপাতালে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৩৪ জন। এতে ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া হামলা চালিয়ে গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৫ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৬৪৪ জনের বেশি। এ নিয়ে ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৬০ জনে। আহত হয়েছেন আরও ৭ হাজার ২০৭ জনের বেশি।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল আবারও গাজায় হামলা শুরু করে। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত তারা ৮ হাজার ৩৩৬ জনকে হত্যা করেছে এবং আহত করেছে ৩১ হাজার ৪ জনকে। এই হামলার মাধ্যমে তারা জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তিও লঙ্ঘন করে।
এর আগে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া, গাজায় চলমান আগ্রাসনের ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।
Your Comment