৪ আগস্ট ২০২৫ - ০৯:৫৫
সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছাড়া নিরস্ত্রীকরণে সম্মত নয় হামাস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

আহলে বাইত (আ.) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আবনা): উইটকফ দাবি করেছিলেন, “হামাস তাদের অস্ত্র সমর্পণে ইচ্ছুক।” তার জবাবে হামাস জানায়, তাদের প্রতিরোধ ও অস্ত্রধারনের অধিকার তারা বজায় রাখবে যতক্ষণ না পর্যন্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয়।

বিবিসি জানায়, ইসরায়েল হামাসের নিরস্ত্রীকরণকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির অন্যতম শর্ত হিসেবে উপস্থাপন করেছে। তবে সম্প্রতি এ নিয়ে পরোক্ষ আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। একদিকে আরব সরকারগুলো হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ ও গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে আহ্বান জানাচ্ছে, অন্যদিকে ফ্রান্স, কানাডাসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ইসরায়েল নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ না করলে তারাও এই পদক্ষেপ নেবে।

হামাস, যাদের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে, তারা বলেছে— স্বাধীনতা ছাড়া কোনও চুক্তি নয়

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের লে. জেনারেল ইয়াল জামির গত শুক্রবার সতর্ক করেন, “জিম্মিদের মুক্তির আলোচনা ব্যর্থ হলে গাজায় আরও বড় লড়াই অনিবার্য।”

এদিকে জিম্মিদের একজন, এভিয়াতার ডেভিডের পরিবার অভিযোগ করেছে যে, তিনি ক্ষুধার্ত অবস্থায় আছেন। তারা ইসরায়েল সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তার মুক্তির জন্য সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ বর্তমানে ইসরায়েল সফরে আছেন। শনিবার তিনি তেল আবিবে জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তার সফরে একটি পরিচিত বিক্ষোভস্থলে পৌঁছালে জিম্মিদের স্বজন ও সমর্থকরা তাকে স্বাগত জানান। উইটকফ বলেন, “আংশিক নয়, সংঘাতের সম্পূর্ণ অবসান দরকার এবং সব জিম্মিকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে হবে।” তিনি ইতোমধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। এছাড়া তিনি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে বিতর্কিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসরায়েলের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ জানায়, মে মাস থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১,৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর জবাবে গাজায় চালানো ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়। এছাড়া অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও ১৬৯ জন, যাদের মধ্যে ৯৩ জন শিশু রয়েছে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha