২৬ আগস্ট ২০২৫ - ১৫:৩৯
গাজায় প্রাণহানি ছাড়াল ৬২ হাজার ৭০০

২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৮৬ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলায়। বাকি ২৮ জন নিহত হয়েছেন খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে।



মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সোমবার ভোরবেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার হাসপাতালগুলোতে ৮৬ জনের মরদেহ এবং ৪৯২ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। তবে আহত ও নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। কারণ তাদের অনেকেই ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকা পড়েছেন এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও লোকবলের অভাবে তাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।”

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবারের পর ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ হাজার ৭৪৪ জনে। এদের পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।

গাজায় উপত্যকা আটকে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের প্রচেষ্টায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল এবং উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। কিন্তু ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। সেই থেকে এ পর্যন্ত ৫ মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ১০ হাজার ৯০০ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ২১৮ জন।

গত মে মাসের শেষ দিক থেকে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ মে প্রথম গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা এবং তারপর থেকে নিয়মিতই এটি ঘটছে।

গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ২ হাজার ১২৩ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৬১৫ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও  বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন এখনও জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু  জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha