আহলে বাইত (আ.) নিউজ এজেন্সি (আবনা) অনুসারে: নবী মুহাম্মদ (স.)-এর জীবন পদ্ধতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে তিনি মুমিনদের প্রতি দয়া ও স্নেহ এবং জালেমদের বিরুদ্ধে দৃঢ়তা ও কঠোরতা—এই দুটি দিককে অবিচ্ছেদ্যভাবে একত্রিত করেছেন। এই দুটি দিক মূলত "ন্যায়বিচার" প্রতিষ্ঠা এবং "সাম্য" প্রতিষ্ঠার জন্য পরিপূরক উপকরণ ছিল।
নবীর দয়া মুমিনদের সমাজে সহানুভূতি ও নৈতিকতা জোরদার করার দিকে নিবদ্ধ ছিল, যেখানে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ছিল জুলুম দমনের একটি বাহ্যিক উদ্দেশ্য। এই লেখাটি কুরআনের মূলনীতি এবং ঐতিহাসিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে দেখায় যে নবী (স.) কখনোই জুলুমের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ছিলেন না এবং অবিচারের বিরুদ্ধে নীরব থাকাকে জায়েজ মনে করতেন না।
নবীর (স.) রহমত ও প্রতিরোধ
নবীর (স.) জীবন পদ্ধতি মুমিনদের প্রতি সীমাহীন দয়া এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে পূর্ণ দৃঢ়তার মিশ্রণ ছিল। এই দ্বৈততা কোনো বিরোধ নয়, বরং একটি বুদ্ধিমান ও নীতিগত পদ্ধতির নির্দেশক, যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সেবায় নিয়োজিত। গাজার বর্তমান সংকটে এই প্রশ্ন উঠেছে যে এমন দুর্যোগের মুখে নবী (স.)-এর অবস্থান কী হতো? এই প্রতিবেদনটি নবীর জীবন পদ্ধতিতে দয়া ও দৃঢ়তার দুটি দিককে পরিপূরক ধরে নিয়ে এই বিষয়টি তুলনামূলকভাবে পরীক্ষা করে।
দয়ার স্তম্ভ; নবীর জীবন পদ্ধতিতে স্নেহ ও রহমত
রহমতের ঐশ্বরিক ভিত্তি
রহমত নবীর (স.) রেসালতের সারমর্ম: "আমি আপনাকে জগৎসমূহের জন্য রহমতস্বরূপই প্রেরণ করেছি" (আম্বিয়া: ১০৭)। এই আয়াতটি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে নবী (স.)-এর প্রেরণের মূল উদ্দেশ্যই হলো সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য রহমতস্বরূপ হওয়া। এই বিশ্বজনীন রহমত কেবল মুসলমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং শত্রুদেরও অন্তর্ভুক্ত করত, যদিও তাদের প্রতি আচরণ ভিন্ন হতে পারত। অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন: "মুমিনদের প্রতি তিনি পরম দয়ালু, অতিশয় মেহেরবান" (তওবা: ১২৮), যা মুমিনদের প্রতি তাঁর গভীর সহানুভূতি, মমত্ববোধ এবং তাদের কল্যাণ কামনার বিষয়টি স্পষ্ট করে। এই আয়াতগুলো নবীর (স.) রেসালেতের একটি মৌলিক স্তম্ভ হিসেবে তাঁর রহমতকে প্রতিষ্ঠিত করে।
নবী (স.)-এর ব্যবহারিক জীবন ছিল নম্রতা, শিশুদের প্রতি দয়া এবং দরিদ্রদের প্রতি সেবার উদাহরণে পরিপূর্ণ।
নবী (স.)-এর জীবন ছিল তাঁর এই ঐশ্বরিক বাণীর বাস্তব প্রতিচ্ছবি। তিনি কেবল মৌখিক আস্বাসে তাঁর রহমত প্রকাশ করেননি, বরং তাঁর প্রতিটি কাজ, প্রতিটি আচরণে এর প্রতিফলন ঘটাতেন।
-
শিশুদের প্রতি দয়া: তিনি প্রায়শই তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইনের প্রতি গভীর স্নেহ প্রদর্শন করতেন। যখন তিনি নামাজ পড়তেন এবং হাসান বা হুসাইন তাঁর পিঠে চড়তেন, তিনি দীর্ঘক্ষণ সেজদায় থাকতেন যাতে তারা নেমে আসতে পারে। এটি শিশুদের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসার এবং তাদের প্রতি তাঁর সহনশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
-
দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের প্রতি সেবা: তিনি নিজে অভুক্ত থাকতেন এবং ক্ষুধার্তকে খাদ্য দিতেন। তিনি অভাবগ্রস্তদের খোঁজখবর নিতেন, তাদের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করতেন। একবার তিনি এক অন্ধ সাহাবীর জন্য নিজের উট দিয়েছিলেন এবং তার কাছে গিয়েছিলেন, এটি তাঁর "সক্রিয় দয়া"র একটি উদাহরণ। তিনি কেবল দয়ার কথা বলেই ক্ষান্ত হননি, বরং তা বাস্তবে পরিণত করেছেন এবং এই "সক্রিয় দয়া"কে নেতাদের জন্য একটি আদর্শ হিসেবে স্থাপন করেছিলেন।
-
সাধারণ ক্ষমা ও সহনশীলতা: মক্কা বিজয়ের সময়, যখন মক্কার কুরাইশরা ইসলামের উপর দীর্ঘকাল ধরে নির্যাতন চালিয়েছিল, তখনও নবী (স.) সেখানে প্রবেশ করে "আজ দয়ার দিন" স্লোগান দিয়ে সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন (ইবনে হিশাম, আস-সিরাত আন-নাবাবিয়া)। এটি তাঁর সহনশীলতা ও উদারতার এক অভাবনীয় দৃষ্টান্ত, যা শত্রুদেরও আশ্বস্ত করেছিল এবং ইসলামের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়ক হয়েছিল।
রহমত ও কূটনীতি: হুদাইবিয়ার সন্ধি
হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল নবী (স.)-এর বিচক্ষণতা, দূরদৃষ্টি এবং দয়ার এক অপূর্ব সমন্বয়ের উদাহরণ। বাহ্যিকভাবে এই সন্ধিতে মুসলমানদের কিছু অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছিল বলে মনে হতে পারে, যেমন মুসলমানদের মক্কায় প্রবেশে বাধা এবং যারা মক্কা থেকে পালিয়ে মদিনায় আসত তাদের ফিরিয়ে দেওয়া। কিন্তু এই সন্ধিটি ছিল একটি দীর্ঘমেয়াদী কূটনৈতিক চাল, যা শেষ পর্যন্ত ইসলামের প্রসারে এক বিশাল ভূমিকা রেখেছিল (বুখারী, সহীহ আল-বুখারী)। এই চুক্তির ফলেই আল্লাহর পক্ষ থেকে "নিশ্চয়ই আমি তোমাকে একটি সুস্পষ্ট বিজয় দিয়েছি" (ফাতহ: ১) আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল। এই আয়াতটি প্রমাণ করে যে, বাহ্যিক আপাত অপূর্ণতা সত্ত্বেও, এই চুক্তিটি ছিল এক মহান বিজয়। এই চুক্তি দেখিয়েছিল যে নবীর দয়া কখনোই জুলুমের বিরুদ্ধে নীরবতার বা আপসের অর্থ ছিল না, বরং এটি ছিল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি সূক্ষ্ম ও কৌশলী পথ।
জুলুমের বিরুদ্ধে দৃঢ়তা
জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ঐশ্বরিক দায়িত্ব
কুরআন মাজীদ জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে কেবল একটি ঐচ্ছিক কর্ম নয়, বরং একটি অপরিহার্য শরীয়তসম্মত কর্তব্য বলে মনে করে। সূরা নিসার ৭৬ আয়াতে আল্লাহ বলেন: "যারা কুফরী করে, তারা তাগুতের (শয়তানের) পথে লড়াই করে।" এই আয়াতটি পরিষ্কারভাবে নির্দেশ করে যে, যারা সত্যের বিরোধিতা করে, তারা মিথ্যা ও অত্যাচারের পক্ষে দাঁড়ায়। কেবল তাই নয়, হাদিসে কুদসীতেও এই বিষয়ে এক কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে: "আমার সম্মান ও মহত্ত্বের কসম, আমি জালেমের দুনিয়া ও আখেরাতে প্রতিশোধ নেব, এবং যে মজলুমকে দেখেও সাহায্য করতে সক্ষম ছিল কিন্তু সাহায্য করেনি, তারও প্রতিশোধ নেব।" (কানযুল উম্মাল, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৫০৫)। এই হাদিসটি মজলুমের পাশে দাঁড়ানো এবং জালেমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর যে কত বড় দায়িত্ব, তা স্পষ্ট করে তোলে। এটি কেবল শাসক বা সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরই নয়, বরং প্রতিটি মুসলমানের উপর অর্পিত একটি সাধারণ কর্তব্য।
সংগ্রামে নবীর ব্যবহারিক জীবন পদ্ধতি
নবী (স.) তাঁর জীবনে জুলুম ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কখনো পিছু হটেনি। তাঁর জীবন পদ্ধতি ছিল জুলুমের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।
-
আক্রমণকারী ও চুক্তি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: তিনি যখন মদিনায় একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তিনি মক্কার কুরাইশদের আগ্রাসন এবং চুক্তি ভঙ্গের জবাবে বিভিন্ন সময়ে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। হুদাইবিয়ার সন্ধি কুরাইশদের দ্বারা ভঙ্গ হওয়ার পর মক্কা বিজয় ছিল এই নীতির একটি বাস্তব উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে তিনি মক্কার উপর আধিপত্য বিস্তার করেন এবং আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করেন (ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া)।
-
অহংকারী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান: তিনি তাঁর সময়ের প্রভাবশালী সাম্রাজ্যগুলোর কাছেও সত্যের বাণী পৌঁছে দিয়েছিলেন। ইরান ও রোমের রাজাদের কাছে চিঠি পাঠানো এবং তাদের ইসলামে দাওয়াত দেওয়া তৎকালীন অহংকারী ও জুলুমবাজ শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে তাঁর সুস্পষ্ট অবস্থানের নির্দেশক ছিল। এই চিঠিগুলোর মাধ্যমে তিনি কেবল তাদের ইসলাম গ্রহণের আহ্বানই জানাননি, বরং তাদের অন্যায় শাসন ও জুলুমের বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছিলেন (তাবারি, তারিখ আল-তাবারি)।
ন্যায়ের আলোকে রহমত ও দৃঢ়তা
রহমত ও দৃঢ়তা ছিল একই মুদ্রার দুটি দিক, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।
নবী (স.)-এর জীবন পদ্ধতিতে রহমত ও দৃঢ়তা কোনো দুটি বিপরীতমুখী বা সাংঘর্ষিক বিষয় ছিল না। বরং এগুলো ছিল একই লক্ষ্যের দুটি পরিপূরক দিক। তাঁর রহমত ছিল জুলুমের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি, আর তাঁর দৃঢ়তা ছিল জুলুমকারী ও আগ্রাসনকারীদের বিরুদ্ধে। এই দুইয়ের সমন্বয়ে তিনি সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতেন।
মক্কা বিজয় ছিল এই সমন্বয়ের একটি বাস্তব উদাহরণ: মক্কা বিজয়কালে তিনি একদিকে যেমন সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে মক্কার জনগণকে তাঁর রহমত ও উদারতার অংশীদার করেছিলেন, তেমনি অন্যদিকে তিনি তাঁর সামরিক শক্তি (দৃঢ়তা) ব্যবহার করে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা এবং শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছিলেন। এটি দেখায় যে, কখনো কখনো জুলুমের মূলোৎপাটনের জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ অপরিহার্য হতে পারে, কিন্তু তার উদ্দেশ্য থাকে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, যা চূড়ান্তভাবে রহমতেরই একটি রূপ।
গাজা সংকটে মুসলমানদের দায়িত্ব
১. মজলুমকে সাহায্য করার শরীয়তসম্মত কর্তব্য
"যদি তারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের কাছে সাহায্য চায়, তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য" (আনফাল: ৭২) আয়াত অনুসারে, গাজার জনগণের উপর যে নির্মম নির্যাতন চলছে, সেটিকে ইসলামে একটি অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আয়াতটি কেবল ধর্মীয় সহায়তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সামগ্রিকভাবে মজলুম ও অসহায়কে সাহায্য করার নির্দেশনা দেয়। গাজার মুসলমানরা তাদের ধর্ম, তাদের ভূমি এবং তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যে সংগ্রাম করছে, সেখানে তাদের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। আত্মরক্ষামূলক জিহাদ বা মজলুমকে সাহায্য করার জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয় না এবং এটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য ওয়াজিব।
২. মুসলিম নেতাদের নীরবতার সমালোচনা
গাজায় সংঘটিত ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় এবং মুসলিম বিশ্বের অনেক নেতার নীরবতা নবীর (স.) জীবন পদ্ধতির সরাসরি পরিপন্থী। নবী (স.) কখনোই জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীরব থাকেননি। তিনি জালিমের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন এবং মজলুমের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। দুর্ভাগ্যবশত, কিছু সরকার তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থ বা আন্তর্জাতিক চাপের কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এড়িয়ে যায় এবং এই নীরবতার আড়ালে তারা তাদের ঈমানী দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত হয়। এটি উম্মাহর জন্য একটি বড় লজ্জা।
৩. নবীর জীবন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে কাজের মডেল
যদি নবী (স.) আজ আমাদের মাঝে উপস্থিত থাকতেন, তবে নিঃসন্দেহে তিনি এই সংকটময় মুহূর্তে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নিতেন, যা আমাদের জন্য একটি আদর্শ মডেল:
-
মজলুমদের সামরিকভাবে রক্ষা করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতেন: নবী (স.) কখনো মজলুমকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেননি। তিনি অবশ্যই গাজার মজলুমদের সামরিকভাবে রক্ষা করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন, যেখানে সম্ভব সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেন।
-
ইসরায়েলি শাসন এবং তার সমর্থকদের অর্থনৈতিক বয়কটের নির্দেশ দিতেন: তিনি অবশ্যই শত্রুদের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য বয়কটের মতো কার্যকর পদক্ষেপের নির্দেশ দিতেন। এটি কেবল একটি প্রতীকী কাজ নয়, বরং এটি শত্রুদের উপর চাপ সৃষ্টি করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
-
অপরাধ প্রকাশ করার জন্য সমস্ত মিডিয়া ক্ষমতা ব্যবহার করতেন: তিনি এই ভয়াবহ অপরাধ ও জুলুমের চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য সমস্ত মিডিয়া ক্ষমতা ব্যবহার করতেন। সত্য ও তথ্যের সঠিক প্রচারের মাধ্যমে তিনি বিশ্ব জনমতকে জাগ্রত করতেন।
-
আর্থিক ও আধ্যাত্মিক সাহায্যের জন্য মুসলমানদের সাধারণ সংহতি আহ্বান করতেন: তিনি সারা বিশ্বের মুসলমানদের গাজার অধিবাসীদের আর্থিক ও আধ্যাত্মিক সহায়তার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানাতেন। তিনি উম্মাহর মধ্যে সংহতি ও সহানুভূতির বার্তা ছড়িয়ে দিতেন।
পরিশেষে উল্লেখ করা যায়: নবীর (স.) জীবন পদ্ধতি এমন একটি পথ দেখায় যেখানে রহমত ও দৃঢ়তার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই, বরং উভয়ই ন্যায়বিচার ও সাম্যের সেবায় নিয়োজিত। গাজার উপর সংঘটিত ভয়াবহ অপরাধের বিরুদ্ধে নীরবতা এই জীবন পদ্ধতির প্রতি এক গভীর বিশ্বাসঘাতকতা। উম্মতে মুসলিমার উচিত এই মূল্যবান উত্তরাধিকার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গাজার মজলুমদের সাহায্য করার জন্য তাদের সমস্ত সক্ষমতা কাজে লাগানো। এটি কেবল একটি মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি ঈমানী দায়িত্ব যা আদায় করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।