‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

৯ নভেম্বর ২০২২

৫:৩৭:৫২ PM
1321722

ইরাক ও সিরিয়া সীমান্তে নতুন করে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর নানা রহস্য

লেবাননগামী ইরানি তেলবাহী ট্যাংকার বহর ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের আলক্বায়েম ক্রসিং এলাকায় বিমান হামলার শিকার হয়েছে।

আজ (বুধবার) ভোরের এ হামলাকে মার্কিন অথবা ইহুদিবাদী ইসরাইলের কাজ বলে মনে করা হচ্ছে। কোনো কোনো সূত্র জানিয়েছে ইরানের ২২টি ট্যাংকারের ওই বহরের ৮টি ট্যাংকার ইরাক থেকে ওই ক্রসিং পয়েন্ট অতিক্রম করে সিরিয়ায় ঢোকার পর দুটি ট্যাংকারের ওপর অজ্ঞাত-পরিচয় ড্রোন থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে সেসবে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি এবং এ হামলা সম্পর্কে ইরান এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।

ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইরাক ও সিরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন এ অঞ্চলের বিশাল অংশ এক সময় মার্কিন মদদপুষ্ট দায়েশ বা কথিত আইএস সন্ত্রাসীদের দখলে ছিল। দক্ষিণ পূর্ব সিরিয়ার শেষ প্রান্তে ফোরাত নদীর দক্ষিণে সিরিয়ার দিইর আযযুর প্রদেশের আলবুকামাল ক্রসিং পয়েন্ট এবং সীমান্তের অন্যপাশে ইরাকের আল আনবার প্রদেশের আলক্বায়েম ক্রসিং পয়েন্ট মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। দায়েশ ২০১২ সালে আলবুকামাল এবং ২০১৪ সালে আলক্বায়েম দখল করেছিল।

ইরাকের পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্স বা হাশদ্‌আশ শাব্‌য়ি নামক সাবেক স্বেচ্ছাসেবী গণবাহিনী ও দেশটির সশস্ত্র বাহিনী এবং সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ২০১৭ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে এ দুই ক্রসিং পয়েন্ট মুক্ত করে। সিরিয়ার সঙ্গে স্থলপথে ইরানের যোগাযোগের জন্য এই ক্রসিং পয়েন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। (সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধের কিংবদন্তী হিসেবে পরিচিত ইরানি শহীদ জেনারেল সোলাইমানি ও ইরাকি কমান্ডার শহীদ আবু মাহদি মুহানদিস এ অঞ্চলকে সন্ত্রাসমুক্ত করার প্রধান স্থপতি ছিলেন।)  

সিরিয়া ও ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধারা এ অঞ্চলে উপস্থিত থাকায় এ অঞ্চল বার বার হামলা চালিয়েছে মার্কিন ও ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বা তাদের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা। ফলে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জান ও মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর আগে পশ্চিম এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদী ও দখলদার শক্তি বিরোধী প্রতিরোধকামী দলগুলোর ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন  বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

এখন এমন সময়ে এ হামলা চালানো হল যখন ইরানের ভেতরে মার্কিন-সৌদি-ইসরাইলি ও পশ্চিমা-কুচক্রী মহলের সর্বাত্মক মদদপুষ্ট একদল দাঙ্গাবাজ সহিংসতা ও নাশকতামূলক অপতৎপরতা বিস্তারে সক্রিয়। তেলআবিব এবং ওয়াশিংটন ভেবেছে ইরান ঘরোয়া সহিংসতা দমনে ব্যস্ত থাকায় এ সময়ে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে হামলার কোনো জবাব দেবে না!  

ইসরাইলের সংসদ নির্বাচনে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটের বিজয় ও লেবাননের জ্বালানী সংকট দুর করতে না দেয়ার ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও এ হামলার সম্পর্ক রয়েছে যাতে সামগ্রিকভাবে প্রতিরোধকামী শক্তিগুলোকে দুর্বল দেখানো যায়।

এ হামলা ইরাক ও সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। ইরাক, লেবানন ও সিরিয়ার সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতেই বৈধভাবে ইরানের তেল লেবাননে পাঠানো হচ্ছে। তাই এ কাজে বাধা দেয়া সন্ত্রাসী তৎপরতা ছাড়া অন্য কিছু নয়। ইরাকের নতুন সরকার তথা মুহাম্মাদ শয়া আস সুদানির সরকারকে বাধা ও চ্যালেঞ্জের মুখে রাখা এবং ইরাক ও সিরিয়ার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করাও এ অঞ্চলে বার বার মার্কিন বা ইসরাইলি হামলার অন্যতম লক্ষ্য বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।   #