২৮ অক্টোবর ২০২৪ - ১৭:০০
মুসা (আ)'র লাঠি থেকে ইয়াহিয়ার লাঠি/ ফেরাউনের বংশধরদের বিরুদ্ধে সিনওয়ারের কিংবদন্তি লড়াই

ইতেমাদ পত্রিকার লেখক বিশ্বাস করেন যে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের সঙ্গে যা ঘটেছিল তা তাকে একজন মহান কিংবদন্তিতে পরিণত করেছে।

ভার্চুয়াল জগতে প্রকাশিত বিষয়বস্তু এবং শব্দ চয়ন এবং বর্ণনার ভিত্তিতে ইয়াহিয়া সিনওয়ার শহীদ হওয়ার পর থেকে বিশ্ব অঙ্গনে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ইসরায়েলি সরকার কর্তৃক তার শাহাদাতের ভিডিও প্রকাশের পর। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলো ইয়াহিয়াকে একজন কিংবদন্তি সেনাপতি হিসেবে মানুষের মাঝে আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে।

পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে, ইরানের বিশ্লেষক সাইয়্যেদ আতাউল্লাহ মোহাজেরানী এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করে লিখেছেন, পবিত্র কুরআন সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং মূসা (আঃ) এর মধ্যে কথোপকথন বর্ণনা করেছে। কুরআনের দশটি উপলক্ষ ও আয়াতে লাঠির কথা বলা হয়েছে; সকল আয়াতে মূসা (আঃ)-এর লাঠির কথা বলা হয়েছে। সুলাইমান (আঃ)'র লাঠি এবং তার পিপঁড়া বাহিনীর তুমুল খ্যাতি সত্ত্বেও কোরআনের কোনো আয়াতে এর কোন চিহ্ন নেই। সূরা ত্বহায় ১৭ থেকে ২১ নং আয়াতে মূসার লাঠি এবং এর কার্যকারিতা ও ব্যবহারের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে: “মূসা! তোমার ডান হাতে কি আছে? তিনি বললেনঃ এটা আমার বেত। আমি এটার উপর নির্ভর করি। এটা দিয়ে আমি আমার ভেড়ার জন্য বৃক্ষপত্র ঝেড়ে ফেলি । আমার জন্য অন্যান্য সুবিধা আছে! আল্লাহ বললেন, হে মূসা! তোমার লাঠি নিক্ষেপ করো! অতপর তিনি নিক্ষেপ করলেন ! অমনি তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল। আল্লাহ বললেন: এক ধরো। ভয় পেয়োনা। আমি এখনি একে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিচ্ছি।

যখন ইয়াহিয়া সিনওয়ার বোমাবর্ষণের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকেও ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়েও উজ্জ্বল এবং বুদ্ধিমান চোখ দিয়ে জীবনের শেষ মুহূর্তে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দিকে তার লাঠি ছুড়ে মারেন। আমরা এমন একটি সেনাবাহিনীর কথা বলছি যে নিপীড়ন এবং শিশু হত্যার সাথে মুসা (আ)'র সময়ের ফেরাউন দ্বিতীয় রামসেসের আচরণের সঙ্গে অনেক মিল রয়েছে। অবিলম্বে এটি আমার মনের মধ্যে জ্বলজ্বল করছে এবং আমরা আপনার সম্পর্কে চিন্তা করছি। ইয়াহিয়া!" আপনার ডান হাতে কি? মুসা থেকে ইয়াহিয়া, ফেরাউন থেকে নেতানিয়াহু, মুসার লাঠি থেকে ইয়াহিয়ার লাঠি পর্যন্ত ইতিহাস কী একটি সংক্ষিপ্ত পথ! মূসার অলৌকিক ঘটনা আমাদের সামনে অন্য ক্ষমতায় পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। মিথ বাস্তবে পরিণত হয়েছে।

ইয়াহিয়া আল-সানওয়ার, আরাশ কামাঙ্গিরের মতো ইরানী কথাসাহিত্য এবং পুরাণে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। তার মতো ফিলিস্তিনি শিশু-কিশোররা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একক সোফায় বসে থাকে। তারা একে অপরের উপর পা রাখে। তারা হাসে তারা একটি লাঠি ধরে। এর অর্থ ইয়াহিয়া আল-সানওয়ার এখনও জীবিত এবং অনুপ্রেরণাদায়ক।

চলমান যুদ্ধের ব্যাখ্যায় শক্তিশালী ইহুদিবাদী প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক এবং ইসরাইলের সমর্থকরা বলতে থাকেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। ইসরাইলের যুদ্ধ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। এটা সভ্যতার যুদ্ধ বর্বরতার বিরুদ্ধে। সভ্যতার যুদ্ধ পশ্চাৎপদতার বিরুদ্ধে। নেতানিয়াহু সাম্প্রতিক জাতিসংঘের শীর্ষ সম্মেলনে বলেছিলেন, "তিনি সত্য কথা বলেন,"। ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী গ্যালান্ট বলেছেন "তাদের যুদ্ধ ন্যায়সঙ্গত।"

তারা কখনোই ফিলিস্তিন এবং ফিলিস্তিন শব্দটি উল্লেখ করে না। তারা মনে করে ফিলিস্তিন শেষ হয়ে গেছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের আখ্যান ছড়িয়ে পড়েছে। হঠাৎ করেই অক্টোবরের ৭ তারিখে আল-আকসা তুফান হয় এবং এক বছরেরও বেশি সময় পরে ইয়াহিয়া আল-সানওয়ার যিনি সুড়ঙ্গের মধ্যে লুকিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে তারা বলেছিল যে তিনি তার জীবন বাঁচাতে ফিলিস্তিনি জিম্মি এবং শিশুদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সামনে যুদ্ধের ইউনিফর্মে একটি বাড়িতে উপস্থিত হন এবং তার শেষ প্রতীকী জিহাদে তিনি তার হাতের লাঠিটি আগ্রাসী সেনাবাহিনীর দিকে ছুড়ে দেন। এক কিংবদন্তির জন্ম হয়। তারা তাকে নগন্য হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি তার জীবন উৎস্বর্গ করে শাহাদতের মর্যাদায় আত্মসম্মান নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত রুখে দাঁড়িয়েছেন।#

342/