‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

১৪ ডিসেম্বর ২০২২

৬:২১:৪২ PM
1330809

ইয়েমেনে শিশুদের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে ইউনিসেফের প্রতিবেদন

প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ইয়েমেনে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের জোটের সামরিক আগ্রাসনের কারণে শিশুরা এখনো হতাহতের প্রথম সারিতে রয়েছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ ঘোষণা করেছে যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ১১ হাজারেরও বেশি ইয়েমেনি শিশু হতাহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৭৭৪ জন নিহত এবং ৭২৪৫ জন আহত হয়েছে। তবে হতাহতের সংখ্যা ঘোষিত সংখ্যার চেয়ে আরো বেশি হতে পারে।

ইউনিসেফের নির্বাহী প্রধান ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, ইয়েমেনের হাজার শিশু নিহত হয়েছে এবং আরো হাজার হাজার শিশু দুরারোগ্য ব্যধীতে আক্রান্ত হয়ে কিংবা ক্ষুধার কারণে মৃত্যুপথ যাত্রী। এসব শিশুদের জরুরি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। প্রায় ২২ লাখ শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে যাদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৪০ হাজার শিশুর বয়স পাঁচ বছরের নীচে এবং এরা পানি ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে  বঞ্চিত রয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইয়েমেনের ব্যাপারে এটাই ইউনিসেফের প্রথম প্রতিবেদন নয়। এর আগেও তাদের প্রতিবেদনে ইয়েমেনের শিশুদের মানবেতর চিত্র ফুটে উঠেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটেনি। ইয়েমেনের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সৌদি আরবের চাপিয়ে দেয়া গত প্রায় সাত বছরের যুদ্ধে এপর্যন্ত আট হাজার ৮০০ শিশুসহ ৪৭ হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার নিহত এবং আরো ২৯ হাজার ৬৬০ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৪৫৪ জন নারী রয়েছে এবং আহত হয়েছে আরো ২৯৬৬ জন নারী। ইয়েমেনের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সম্প্রতি খুব অল্প সময়ের মধ্যে  ২২০০ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।

জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির  ধারণা যদি ইয়েমেন যুদ্ধ ২০৩০ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে, তাহলে ওই দেশটিতে মানুষের হতাহতের সংখ্যা বাড়বে এবং ১৩ লাখ মানুষ প্রাণ হারাবে। সৌদি অব্যাহত আগ্রাসনের কারণে কয়েকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। প্রথমত, দুটিই আরব দেশ এবং মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল। কিন্তু তারপরও কেন সৌদি আরব অপরাধযজ্ঞ চালাচ্ছে ঠিক যেমনটি ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধযজ্ঞ চালাচ্ছে। দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষ করে আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশ কেন ইয়েমেনের মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে নীরব রয়েছে? সৌদি আরব ও আমিরাত কোন আইনের ভিত্তিতে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে?

এসব প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যদিও ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসনে মূল অপরাধী হচ্ছে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজা  মুহাম্মদ বিন জায়েদ কিন্তু পর্দার আড়ালে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। ইয়েমেনের এ বিপর্যয়ে মূলে রয়েছে ইসরাইলি ষড়যন্ত্র। আরব রাজা বাদশাহরা কেবল ইসরাইলের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক সমাজের নীরবতার প্রধান কারণ হচ্ছে আরব দেশগুলোর কাছে তাদের জ্বালানি স্বার্থ রয়েছে। #