‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
সোমবার

২৭ মার্চ ২০২৩

১০:৫৫:৩৮ AM
1354464

বিশ্বের নারীবাদীরা ইরানের ব্যাপারে সোচ্চার কিন্তু ফ্রান্সের ঘটনায় নীরব কেন? প্রশ্ন তেহরানের

ফ্রান্সে সম্প্রতি সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী বিশেষ করে নারী প্রতিবাদকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর বর্বরতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে এখন একটাই প্রশ্ন আর তা হচ্ছে ফ্রান্সে যখন নারী বিক্ষোভকারীদের ওপর নৃশংস দমন অভিযান চালানো হচ্ছে তখন ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার নারীমন্ত্রীরা ও নারীবাদীরা কেন নীরব রয়েছে এবং তারা এখন কোথায়? কেন ফরাসি প্রতিবাদী নারীদের অধিকারের সমর্থনে তারা কোনো কনসার্ট করছে না?

সম্প্রতি ফ্রান্স সরকার জাতীয় পরিষদকে পাশ কাটিয়ে পেনশন আইন সংশোধনের বিল চূড়ান্ত করার পদক্ষেপ নেয়। এরই প্রতিবাদে ফ্রান্সজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় যেখানে নারীদেরও অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট  ইমানুয়েল ম্যাকরন এবং প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন সংবিধানের ৪৯ এর ৩ নম্বর ধারা এমনভাবে সংশোধন করার পদক্ষেপ নেন যা কিনা সরকারকে জাতীয় পরিষদের অনুমোদন ছাড়াই পেনশন সংক্রান্ত খসড়া বিল অনুমোদন করার অনুমতি দেবে। এরপর থেকেই অবিরাম সরকার বিরোধী নজিরবিহীন বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পেনশন ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২৩ মার্চ জানিয়েছে পেনশন আইনের সংস্কারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভে ১০ লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছে। কিন্তু দৈনিক লামন্ড জানিয়েছে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা ১২ লাখ।  তবে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় ট্রেড ইউনিয়ন সিজিটি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা সাড়ে ৩০ লাখ হবে।

যাইহোক, এসব বিক্ষোভে ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটেছে এবং পুলিশি হামলায় বহু লোক আহত এবং শত শত মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে যাদের মধ্যে অনেক নারী বিক্ষোভকারীও রয়েছে। এ কারণেই ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফ্রান্সের ঘটনায় বিশ্বের নারীবাদীদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিশ্বের নারী মন্ত্রীরা এবং যারা নারী অধিকার রক্ষার কথা বলে তারা কেন ফ্রান্সে নারীদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো কথা বলছে না!  অথচ এই নারীবাদী ও নারী মন্ত্রীরাই নারী অধিকারের দাবি তুলে সম্প্রতি ইরানে দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। ইরানে নারী অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে তারা সারা দুনিয়ায় হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নারী অধিকারের প্রতি সমর্থনের দাবীদার পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে নারীদের দুরবস্থা থেকে বোঝা যায় ওই দেশে নারীরা ভালো নেই এবং তাদের মানবিক অধিকার উপেক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে মানবাধিকারের অন্যতম দাবিদার ফ্রান্সে নারীদের অবস্থা সন্তোষজনক নয়। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২১ সালে স্বামীদের নির্যাতনে বেশ কিছু সংখ্যক স্ত্রী মারা গেছে এবং নারীরা পারিবারিক সহিংসতার শীকার হচ্ছে।

আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে ফ্রান্সের সমাজে নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া চাকুরি ও সামাজিক অধিকারের ক্ষেত্রেও নারীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। এই পরিস্থিতির আলোকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রে ওই  প্রশ্ন যথার্থ। #